বেদব্যাস
কৃষ্ণ দ্বৈপায়ণ বেদব্যাস ব্যাস | |
---|---|
মহাভারত এর রচয়িতা | |
সম্মান | তার জন্মতিথিটি গুরু পূর্ণিমা হিসাবে পালন করা হয় |
মহাভারত এর রচয়িতা |
কৃষ্ণ দ্বৈপায়ণ বা বেদব্যাস বা সংক্ষেপে ব্যাস একজন ঋষি ছিলেন। ইনি বশিষ্ঠের প্রপৌত্র, শক্তির পৌত্র, পরাশরের পুত্র এবং শুকদেবের পিতা। ইনি হিন্দুধর্মের প্রাথমিক প্রত্যাদিষ্ট হিন্দুশাস্ত্র হিসেবে স্বীকৃত বেদের ব্যবহারিক-বিন্যাসকারী, ঐতিহাসিক মহাকাব্য মহাভারত, বেদান্তদর্শন, প্রভৃতির সংকলক, সম্পাদক ও অবশেষে সমন্বায়ক এক জ্ঞানান্বেষী ঋষি। যমুনানদীতে খেয়া নৌকার ভিতর পরাশর মুনি সত্যবতীর সাথে মিলিত হলে, সত্যবতী গর্ভবতী হন। পরে যমুনার একটি দ্বীপে তার জন্ম হয়। যমুনার দ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন বলে এর নাম হয় দ্বৈপায়ন। এঁর গায়ের রং কালো ছিল বলে, পুরো নাম দাঁড়ায় কৃষ্ণ-দ্বৈপায়ন। তার মাথায় কপিল বর্ণের জটা ছিল। তার চোখ ছিল উজ্জ্বল ও মুখে পিঙ্গল বর্ণের দাড়ি ছিল। তিনি তপস্যাবলে মহর্ষিত্ব প্রাপ্ত হয়ে বেদকে চার ভাগে ভাগ করেছিলেন। এই কারণে ইনি বেদব্যাস বা 'ব্যাস' নামে পরিচিত হন। জন্মের পরপরই ইনি তার মায়ের অনুমতি নিয়ে তপস্যার জন্য যাত্রা করে। তার তপস্যার স্থান ছিল বদরিকাশ্রম। এই কারণে ইনি বাদরায়ণ নামেও পরিচিত ছিলেন।
বেদ বিভাজন
[সম্পাদনা]কিংবদন্তিতে আছে যে তিনি বেদকে শতশাখাযুক্ত চার ভাগে বিভক্ত করে বেদব্যাস নামে অভিহিত হয়েছেন। মহর্ষি বেদব্যাস বেদ রচনা করেননি বরং বেদকে শুধু লিপিবদ্ধ করেছেন এবং চার ভাগে বিভক্ত করেছেন।[১]
মহাভারত ও ব্রহ্মসূত্র রচনা
[সম্পাদনা]"যথাতে সংযোগ হয় বিয়োগ অবশ্য।
শরীর অনিত্য জান মরণ অবশ্য।।"
মহাভারতের এরকম হাজারও শ্লোকের রচয়িতা ব্যাসদেব। মহাভারত হতে জানা যায় যে তিনি মহাভারত লিপিবদ্ধ করার জন্য ব্রহ্মার কাছে একজন লিপিকার নিয়োগের পরামর্শ গ্রহণ করতে গেলে ব্রহ্মা গণেশকে নিয়োগ করতে বলেন। গণেশ এই শর্তে লিপিকার হতে সম্মত হলেন যে, লিপিবদ্ধ করার সময় তিনি ক্ষণমাত্রও থামবেন না। ব্যাস তাতে রাজি হয়ে অপর একটি শর্ত জুড়ে দিয়ে বললেন যে, গণেশ কোনো বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণ না বুঝে লিপিবদ্ধ করতে পারবেন না। এরপর গণেশ এই শর্তে রাজি হলে মহাভারত লিখা শুরু হয়। ব্যাসদেব তার শ্লোক রচনার মাঝে মাঝে কিছু জটিল শ্লোক রচনা করতেন। গণেশ এই শ্লোকগুলির অর্থ বুঝে লিখতে যে সময় ব্যয় করতেন, সেই সময়ের মধ্যে ব্যাসদেব আরও অনেক শ্লোক বানিয়ে ফেলতেন।
ব্রহ্মসূত্র রচনা
[সম্পাদনা]ক্ষীণাঙ্গী ৫৫৫ পংক্তিতে বেদব্যাস হিন্দুশাস্ত্রের প্রজ্ঞাসঙ্কলন চয়িত করে নাম দিলেন সৃজকসূত্র। যার পরতে পরতে প্রাচীন বেদের অভিজ্ঞতা ও পুরাণাদির অভিজ্ঞানের মহাকাব্যিক লিপায়ন মহাভারত-নির্যাস গীতার পরিশোধিত আত্মা যেমন উপলব্ধ তেমনি শ্রুতি-স্মৃতির সমুদ্রমন্থিত প্রজ্ঞা সুঅনুধাব্য। সৃজকসূত্র রচনে স্রষ্টা ও সৃষ্টি সম্পর্কিত তার যুক্তিপরম্পরা জ্ঞানান্বেষীকৌশলে স্রষ্টা-অন্বেষণকেই প্রাধান্য দিয়েছেন।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ দেবতত্ত্ব ও হিন্দুধর্ম। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। পৃষ্ঠা পৃষ্ঠা ৭৭৯।
- http://onushilon.org/myth/hindu/beaal.htm
- পৌরাণিক অভিধান, সুধীরচন্দ্র সরকার
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- Srîmad Bhagavatam (Bhagavata Purana), The Story of the Fortunate One (complete)
- The Mahābhārata Kamala Subramaniam translation, full text at archive.org
- Vedanta Sutras of Vyasa with Shankara Bhashya ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে