বিষয়বস্তুতে চলুন

জন প্রাইস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জন প্রাইস
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
জন সিডনি আর্নেস্ট প্রাইস
জন্ম (1937-07-22) ২২ জুলাই ১৯৩৭ (বয়স ৮৭)
হ্যারো, মিডলসেক্স, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১৫ ২৭৯
রানের সংখ্যা ৬৬ ১১০৮
ব্যাটিং গড় ৭.৩৩ ৮.৩৯
১০০/৫০ –/– –/১
সর্বোচ্চ রান ৩২ ৫৩*
বল করেছে ২৭২৪ ৪২২৯৫
উইকেট ৪০ ৮১৭
বোলিং গড় ৩৫.০২ ২৩.৫২
ইনিংসে ৫ উইকেট ২৬
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৫/৭৩ ৮/৪৮
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৭/– ১০৩/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো, ৫ নভেম্বর, ২০১৮

জন সিডনি আর্নেস্ট প্রাইস (ইংরেজি: John Price; জন্ম: ২২ জুলাই, ১৯৩৭) মিডলসেক্সের হ্যারো এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।[] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৬৪ থেকে ১৯৭২ সময়কালে ইংল্যান্ড দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে মিডলসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও নিচেরসারিতে ডানহাতে কার্যকরী ব্যাটিংশৈলী উপস্থাপন করতেন জন প্রাইস

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে মিডলসেক্সের সদস্যরূপে ২৪২ খেলায় অংশগ্রহণ করেন। ২২.৩৯ গড়ে ৭৩৪ উইকেট দখল করেছেন। ওয়েম্বলি ক্রিকেট ক্লাবে খেলার পর ১৯৬৩ সালে ২৫ বছর বয়সে মিডলসেক্সের স্থায়ী সদস্যরূপে খেলতে থাকেন। ১৯৬০-এর দশকের শেষার্ধ্বে মিডলসেক্সের প্রধান বোলিং আক্রমণ পরিচালনাকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।[] এছাড়াও সীমিত ওভারের খেলায় ১৯২ উইকেট পেয়েছিলেন জন প্রাইস।

২২ বছর বয়সে মিডলসেক্সের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে জন প্রাইসের। প্রথম মৌসুমেই সবগুলো খেলায় অংশ নিয়ে ৮৩ উইকেট দখল করেন। ১৯৬৬ সালে আঘাত থেকে ফিরে সুস্থ দেহে খেলার জগতে ফিরে ১৮.৭৪ গড়ে ৯৪ উইকেটের সন্ধান পান। তন্মধ্যে, লর্ডসে ডার্বিশায়ারের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ৮/৪৮ পান। ১৯৬৮ সালে মাত্র ১৬.৫১ গড়ে ৮৯ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। বয়সের ভারে ধাবমান জন প্রাইস ১৯৭০ সালে আরও ৮০ উইকেট পেয়েছিলেন।

১৯৭২ সালে তিনি আরও সুন্দর ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেছিলেন। সাসেক্সের বিপক্ষে ৮/৮৫ ও জিলেট কাপে সারের বিপক্ষে ৬/৩৪ পেয়েছিলেন।

টেস্ট ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে পনেরো টেস্টে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। ২১ জানুয়ারি, ১৯৬৪ তারিখে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে জন প্রাইসের। ঘরোয়া ক্রিকেটে চমকপ্রদ ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে ইংরেজ দলের সদস্যরূপে ভারত গমনের সুযোগ পান তিনি। এ সফরের প্রথম চার টেস্টে অংশ নিয়ে চৌদ্দ উইকেট দখল করেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ে অভ্যস্ত জন প্রাইস ব্যাট হাতে তেমন সুবিধে করতে না পারলেও বোম্বেতে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে মিডলসেক্সের দলীয় সঙ্গী ফ্রেড টিটমাসের সঙ্গে ১৪৪ মিনিট ক্রিজে অবস্থান করে ৩২ রানের জুটি গড়ে দলের পরাজয় রোধ করেছিলেন। কলকাতায় অনুষ্ঠিত পরের টেস্টে ৫/৭৩ লাভে সক্ষমতা দেখালেও আর কোন ইনিংসে তিনের অধিক উইকেট পাননি।

১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে ইংল্যান্ড দলের সাথে দক্ষিণ আফ্রিকা গমনে যান। জোহেন্সবার্গ টেস্টে তিনটি উইকেট পান। ঐ সফরে জন প্রাইস, ডেভিড ব্রাউনটম কার্টরাইটের ন্যায় বোলারেরা আঘাতের কবলে পড়লে কেন পালমারকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ সময়ে তিনি জোহেন্সবার্গে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। তবে, ১৯৬৫ সালে পিঠের ব্যথায় জর্জরিত ছিল তার দেহমন। ১৯৬৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইংল্যান্ড দল সিরিজে পরাজয়বরণ করে। এ সময়ে জন প্রাইসকে ইংল্যান্ডের অন্যতম দ্রুতগতিসম্পন্ন বোলার হিসেবে বিবেচনায় আনা হতো। তাকে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশগ্রহণের জন্য মনোনয়ন দেয়া হলেও আঘাতের কারণে খেলতে পারেননি তিনি। তার পরিবর্তে জন স্নোকে স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছিল।

ছয় বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার পর ৩৪ বছর বয়সে ১৯৭১ সালে ইংরেজ দলে পুনরায় তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[] শুরুরদিকে জহির আব্বাসের ব্যাটিং তাণ্ডবলীলার পরও প্রাইস ৩/২৯ পেয়েছিলেন। এরপর ভারতের বিপক্ষে সিরিজে জন স্নো’র সাথে বোলিং উদ্বোধনে নেমে বেশ ভালো করেন।

লর্ডসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজের সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি। বব ম্যাসি’র দূর্দান্ত বোলিংয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং বিপর্যয় নামে। ঐ ইনিংসে তিনি ১৯ রান তুলেন ও দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকে পরিণত হয়েছিলেন। খেলায় স্বাগতিক দল পরাজয়বরণ করতে বাধ্য হয়। ১৯৭৫ সালে বেনসন এন্ড হেজেস কাপের চূড়ান্ত খেলায় অংশগ্রহণ করেন। ঐ মৌসুম শেষে ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণ করেন জন প্রাইস।

খেলার ধরন

[সম্পাদনা]

কৌণিকভাবে দীর্ঘ দূরত্ব নিয়ে চৌকশ ভঙ্গীমায় আউট সুইঙ্গারে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। তবে, উপর্যুপরি আঘাত লাভের ফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে বেশ ব্যাঘাতের কারণ হয়ে দাঁড়ায় তার খেলোয়াড়ী জীবন।[] ডিপ অঞ্চলে দূর্দান্ত ফিল্ডিং করতেন। তবে, ব্যাট হাতে স্বেচ্ছায় প্রতিপক্ষের কাছে নিজ উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসতেন তিনি।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 134আইএসবিএন 1-869833-21-X 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]