বিষয়বস্তুতে চলুন

পারস্য উপসাগরের আরব দেশসমূহ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
  পারস্য উপসাগরের তীরে সাতটি আরব দেশ

পারস্য উপসাগরের আরব দেশগুলো বা আরব উপসাগরীয় দেশগুলো (আরবি: دول الخليج العربي)[] হচ্ছে পারস্য উপসাগরের সীমান্তবর্তী একগুচ্ছ আরব রাষ্ট্র। এই অঞ্চলে বাহরাইন, কুয়েত, ইরাক, ওমান, কাতার, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত মিলিয়ে মোট সাতটি আরব লিগের সদস্য রাষ্ট্র রয়েছে।[][][] ইয়েমেন গাল্ফ কোঅপারেশন কাউন্সিল এর ছয়টি দেশের সাথে ইতিহাসসংস্কৃতির সূত্রে আবদ্ধ।[]

উপসাগরীয় অঞ্চলের বেশ কয়েকটি আরব রাষ্ট্রকে বোঝাতে এই শব্দটি বিভিন্ন প্রসঙ্গে ব্যবহৃত হয়েছে। এই অঞ্চলের বিশিষ্ট আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংঘ হচ্ছে গাল্ফ কোঅপারেশন কাউন্সিল যার সদস্য রাষ্ট্রগুলি হচ্ছে বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত[][][] আধুনিক ইতিহাসে বিভিন্ন প্রাক্তন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অংশ সহ[][১০][১১] বিভিন্ন চুক্তিবদ্ধ রাষ্ট্রও উপসাগরের আরব দেশ ছিল।[১২][১৩][১৪]

রাজনীতি

[সম্পাদনা]

কয়েকটি উপসাগরীয় আরব দেশে নির্বাচিত সংসদ সহ সাংবিধানিক রাজতন্ত্র প্রচলিত। বাহরাইন এবং কুয়েতে সরাসরি জনগণ দ্বারা আইনসভায় সদস্য নির্বাচন করা হয়।[১৫]

ওমানের একটি উপদেষ্টা পরিষদ (মজলিস আস-শূরা) রয়েছে যা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়।[১৫] সংযুক্ত আরব আমিরাত সাতটি রাজতান্ত্রিক আমিরাতের একটি ফেডারেশন, ফেডারেল জাতীয় কাউন্সিল শুধুমাত্র একটি উপদেষ্টা সংস্থা হিসাবে কাজ করে, কিন্তু এর কিছু সদস্য সাতজন শাসকের দ্বারা মনোনীত একটি সীমিত নির্বাচনী কলেজের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়৷[১৬]

সৌদি আরব সীমিত রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব সহ একটি রাজতান্ত্রিক দেশ। কাতারে একটি নির্বাচিত জাতীয় সংসদ উত্থাপন করা হয়েছে এবং নতুন সংবিধান লেখা হয়েছে, কিন্তু নির্বাচন এখনও অনুষ্ঠিত হয়নি।[১৭] সৌদি আরব ও কাতার হচ্ছে দুইটি দেশ যেখানে ক্রমানুসারে ১৯৩২ ও ১৯৭১ সালে দেশের প্রতিষ্ঠার পর এখনও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।[১৮] ইরাক হচ্ছে পারস্য উপসাগরের একমাত্র সংসদীয় প্রজাতান্ত্রিক দেশ।

সংবাদপত্রের স্বাধীনতা

[সম্পাদনা]

সাতটি আরব উপসাগরীয় দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিভিন্ন মাত্রা রয়েছে। ফ্রিডম হাউস এবং রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস অনুসারে প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় কুয়েতের গণমাধ্যম বেশী স্বাধীনতা উপভোগ করে থাকে।[১৯] উভয় সংস্থাই কুয়েতের সংবাদপত্রকে পারস্য উপসাগরের সমস্ত আরব রাষ্ট্রের মধ্যে মুক্ত হিসাবে স্থান দিয়েছে। আরব বিশ্বের মুক্ত সংবাদপত্রের জন্য কুয়েত শীর্ষ তিনের মধ্যে রয়েছে[২০][২১]

শান্তি

[সম্পাদনা]

আরব উপসাগরীয় দেশগুলি একটি অস্থির অঞ্চলে অবস্থিত এবং তাদের সাতটি দেশের সরকার বিভিন্ন মাত্রার সাফল্য এবং প্রচেষ্টার সাথে তাদের নিজস্ব দেশে এবং অন্যান্য প্রতিবেশী দেশে শান্তির জন্য চেষ্টা করে থাকে। যাইহোক, পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের আরব দেশগুলি, বিশেষ করে কাতার - সন্ত্রাসী ঘোষিত ইসলামী সংগঠন যেমন হামাস এবং ব্রাদারহুডের অর্থায়নের জন্য অভিযুক্ত।[২২] ইন্সটিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিস (আইইপি) এর ২০১৬ সালের বিশ্বশান্তি সূচক অনুসারে, ছয়টি সরকার তাদের নিজ নিজ সীমানার মধ্যে শান্তি বজায় রাখার ক্ষেত্রে বিভিন্ন মাত্রায় সাফল্য অর্জন করেছে এবং কাতার সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে আঞ্চলিক সমকক্ষদের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে এবং বিশ্বব্যাপী ৩৪ তম স্থানে, যেখানে কুয়েত পারস্য উপসাগর এবং মধ্যপ্রাচ্য উভয় অঞ্চলেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে (এবং বিশ্বব্যাপী ৫১), এরপর তৃতীয় স্থানে সংযুক্ত আরব আমিরাত (বিশ্বব্যাপী ৬১)।[২৩]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Riad, Mohamed (১৯৮৬)। "Geopolitics and Politics in the Arab Gulf States (GCC)" [আরব উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলিতে রাজনীতি]। GeoJournal (ইংরেজি ভাষায়)। 13 (3): 201–210। আইএসএসএন 0343-2521জেস্টোর 41143719ডিওআই:10.1007/BF00704811 
  2. Mary Ann Tétreault; Gwenn Okruhlik; Andrzej Kapiszewski (২০১১)। Political Change in the Arab Gulf States: Stuck in Transition [আরব উপসাগরীয় দেশগুলোতে রাজনৈতিক পরিবর্তন: উত্তরণে আটকে গেছে] (ইংরেজি ভাষায়)। ২২ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০২৪ 
  3. World Migration 2005 Costs and Benefits of International Migration [বিশ্ব অভিবাসন ২০০৫ আন্তর্জাতিক অভিবাসনের খরচ এবং সুবিধা] (ইংরেজি ভাষায়)। International Organization for Migration। ২০০৫। পৃষ্ঠা ৫৩। আইএসবিএন 9788171885503। ২৫ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০২৪ 
  4. "U.S. Official to Tour Persian Gulf Arab Lands" [মার্কিন কর্মকর্তারা পারস্য উপসাগরীয় আরব দেশগুলো সফর করবেন]। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯৮৭। ১৩ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০২৪A leading American diplomat will start a trip to Iraq and six other Arab countries of the Persian Gulf region this week to discuss the Iran-Iraq war, Administration officials said today. 
  5. "A History of Missed Opportunities: Yemen and the GCC" [হাতছাড়া সুযোগের ইতিহাস: ইয়েমেন এবং জিসিসি]। Carnegie Middle East Center (ইংরেজি ভাষায়)। ১২ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০২৪ 
  6. Hertog, Steffen (২০১৪)। Arab Gulf States : an assessment of nationalisation policies। ১৮ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০২১ 
  7. Peterson, J. E. (২০০৯)। Life after Oil: Economic Alternatives for the Arab Gulf States। Duke University Press। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০২১ 
  8. "Gulf countries"European Commission। ২১ নভেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মে ২০২১The Gulf Cooperation Council countries – Bahrain, Kuwait, Oman, Qatar, Saudi Arabia and the United Arab Emirates – are important markets for EU agricultural exports. 
  9. Onley, James (২০০৯)। "Britain and the Gulf Shaikhdoms, 1820–1971: The Politics of Protection"CIRS Occasional Papers। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০২১ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  10. Watt, D. C. (১৯৬৪)। "Britain and the Future of the Persian Gulf States"The World Today। Royal Institute of International Affairs। 20 (11): 488–496। জেস্টোর 40393560। ৩১ মার্চ ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০২১ 
  11. Albaharna, Husain (এপ্রিল ১৯৬৯)। "The Legal Status of the Arabian Gulf States. A Study of their Treaty Relations and their International Problems"International & Comparative Law Quarterly। Manchester University Press। 18 (2): 518–519। ২১ নভেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০২১ 
  12. Bey, Frauke (১৯৯৬)। From Trucial States to United Arab Emirates। UK: Longman। পৃষ্ঠা 296–297। আইএসবিএন 978-0-582-27728-1 
  13. Balfour-Paul, G., The End of Empire in the Middle East: Britain's Relinquishment of Power in her Last Three Arab Dependencies, Cambridge University Press, 1984, আইএসবিএন ৯৭৮-০-৫২১-৪৬৬৩৬-৩
  14. Barnwell, Kristi Nichole (২০১১)। "From trucial states to nation state : decolonization and the formation of the United Arab Emirates, 1952–1971"। The University of Texas at Austin। ২১ নভেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০২১For the rulers of the Arab emirates of the Persian Gulf, Wilson's announcement signaled an end of British military protection, and the beginning of a process of negotiations that culminated in the establishment of the United Arab Emirates on December 3, 1971. An examination of the process by which the individual Persian Gulf states became a sovereign federation presents an opportunity to examine the roles of nationalism and anti-imperialism played in the establishment of the Union. 
  15. Diamond, Larry; Plattner, Marc F. (১৭ জুলাই ২০১৪)। Democratization and Authoritarianism in the Arab World [আরব বিশ্বে গণতন্ত্রীকরণ এবং কর্তৃত্ববাদ] (ইংরেজি ভাষায়)। JHU Press। আইএসবিএন 9781421414171। ২৫ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০২৪ 
  16. "Background of the Federal National Council" [ফেডারেল জাতীয় কাউন্সিলের পটভূমি] (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০২৪ >
  17. Ehteshami, Anoushiravan; Wright, Steven M. (২০০৮)। Reform in the Middle East Oil Monarchies [মধ্যপ্রাচ্যের তৈল-রাজত্বে সংস্কার] (ইংরেজি ভাষায়)। Reading, Berkshire, UK: Garnet & Ithaca Press। পৃষ্ঠা 3-45। আইএসবিএন 978-0-86372-323-0ওসিএলসি 153580751 
  18. Robbers, Gerhard (২০০৭)। Encyclopedia of world constitutions [বিশ্ব সংবিধানের বিশ্বকোষ] (ইংরেজি ভাষায়)। 1। পৃষ্ঠা 791। আইএসবিএন 978-0-8160-6078-8 
  19. "FREEDOM OF THE PRESS 2013 | GLOBAL PRESS FREEDOM RANKINGS" [সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ২০১৩ | বৈশ্বিক গণমাধ্যম স্বাধীনতা ক্রম] (পিডিএফ) (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০২৪ 
  20. "Freedom of the Press 2016" [সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ২০১৬]। freedomhouse.org (ইংরেজি ভাষায়)। ২৬ এপ্রিল ২০১৬। ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০২৪ 
  21. "2016 World Press Freedom Index" [বৈশ্বিক স্বাধীনতার সূচক ২০১৬]। ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  22. "Four huge Middle Eastern powers just cut ties with Qatar over 'terrorism' links" [মধ্যপ্রাচ্যের চারটি বড় শক্তি 'সন্ত্রাস' যোগসূত্রের কারণে কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে]। The Independent (ইংরেজি ভাষায়)। ৫ জুন ২০১৭। ৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০২৪ 
  23. "Global Peace Index 2016" [বিশ্ব শান্তি সূচক ২০১৬] (পিডিএফ) (ইংরেজি ভাষায়)। ১৫ জুন ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 

আরও পড়ুন

[সম্পাদনা]