বিষয়বস্তুতে চলুন

ডেভিড অ্যাটনবারা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
স্যার ডেভিড অ্যাটনবোরো
অক্সফোর্ডে অ্যাটনবোরো
জন্ম (1926-05-08) ৮ মে ১৯২৬ (বয়স ৯৮)
আইলওয়ার্থ, লন্ডন
জাতীয়তাব্রিটিশ
মাতৃশিক্ষায়তন
  • ক্লেয়ার কলেজ, কেমব্রিজ (প্রাকৃতিক বিজ্ঞান)
  • লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স (সামাজিক নৃবিজ্ঞান)
পেশা
  • সম্প্রচারক
  • প্রকৃতিবিদ
কর্মজীবন১৯৫২-বর্তমান
উপাধি
  • অর্ডার অফ মেরিটের সদস্য
  • কম্প্যানিয়ন অনার
  • কমান্ডার অফ দ্য রয়েল ভিক্টোরিয়ান অর্ডার
  • কমান্ডার অফ দি অর্ডার অফ দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার
  • রয়েল সোসাইটির ফেলো
  • লন্ডন জুওলজিক্যাল সোসাইটির ফেলো
দাম্পত্য সঙ্গীজেইন এলিজাবেথ এবসওয়ার্থ অরিয়েল (১৯৫০-৯৭, তার মৃত্যু)
সন্তান
  • রবার্ট অ্যাটেনব্রো
  • সুজান অ্যাটেনব্রো

স্যার ডেভিড ফ্রেডরিক অ্যাটনবোরো (ইংরেজি: Sir David Frederick Attenborough), (জন্ম: ৮ই মে, ১৯২৬, লন্ডন, ইংল্যান্ড) প্রখ্যাত ব্রিটিশ সম্প্রচারক, লেখক এবং প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা। টেলিভিশনে নতুন ধারার প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের মাধ্যমে প্রকৃতি, জীবজগৎ, সংস্কৃতি, সভ্যতা ও বিজ্ঞানের নানা বিষয় সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য তিনি বিখ্যাত। বিশেষ করে বিবিসি ন্যাচারাল হিস্টরি ইউনিটের তত্ত্বাবধায়নে নির্মিত নয়টি ন্যাচারাল হিস্টরি ডকুমেন্টারি সিরিজ, যা "লাইফ কালেকশন" নামেও জনপ্রিয়, তিনি হলেন সে সিরিজের লেখক এবং উপস্থাপক। সিরিজটি ভূপৃষ্ঠের উদ্ভিদ ও প্রাণীদের নিয়ে ব্যাপক জরিপভিত্তিক আলোচনার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রসিদ্ধ।‌ তার প্রধান আগ্রহের বিষয় প্রাকৃতিক ইতিহাস। তিনি বিখ্যাত চলচ্চিত্র প্রযোজক ও অভিনেতা স্যার রিচার্ড অ্যাটনবোরোর ছোট ভাই।

তাকে গ্রেট ব্রিটেনের একজন জাতীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে গণ্য করা হয়, যদিও তিনি এই সম্বোধনটি পছন্দ করেন না। ২০০২ সালে বিবিসির যুক্তরাজ্যভিত্তিক জনমত জরিপ "১০০ সেরা ব্রিটন"এ তাঁকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ইতিহাসে তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি টেলিভিশনে একাধারে সাদাকালো, রঙিন, হাই‌ ডেফিনিশন আর ফোর কে প্রযুক্তির অনুষ্ঠানের সম্প্রচারক হিসেবে বাফটা (BAFTA) তথা "ব্রিটিশ একাডেমি অব ফ্লিম অ্যান্ড টেলিভিশন আর্ট অ্যাওয়ার্ড" অর্জন করেছেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

অ্যাটনবোরো পড়াশোনা করেছেন কেমব্রিজের ক্লেয়ার কলেজে। ১৯৪৭ সালে সেখান থেকেই এম.এ. ডিগ্রি অর্জন করার পর ১৯৪৯ সালে একটি প্রকাশনা সংস্থায় চাকরি শুরু করেন। ১৯৫২ সালে ব্রিটিশ ব্রডক্যাস্টিং কর্পোরেশন তথা বিবিসি-র একটি প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের পর তিনি বিবিসির সাথে যুক্ত হয়ে যান। তার জীবন শুরু হয় টেলিভিশন প্রযোজক হিসেবে। সরীসৃপ সংরক্ষণবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক জ্যাক লেস্টারের সাথে মিলে ১৯৫৪ সালে তিনি জু কোয়েস্ট (Zoo Quest) নামে একটি টিভি অনুষ্ঠানের ধারণা নিয়ে আসেন। এই অনুষ্ঠানে বনে এবং চিড়িয়াখানায় প্রাণীদের সরাসরি দেখানো হতো। এর মাধ্যমে বিবিসির কর্মপরিসর অনেক বেড়ে যায়।

১৯৬৫ সালে বিবিসির দ্বিতীয় টিভি চ্যানেল বিবিসি-২ প্রতিষ্ঠার পর অ্যাটনবোরোকে চ্যানেলটির নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব দেয়া হয়। দায়িত্ব নিয়ে তিনি বেশ কিছু অভূতপূর্ব এবং আলোড়ন সৃষ্টিকারী টিভি অনুষ্ঠানের প্রযোজনা এবং পৃষ্ঠপোষকতা করেন যার মধ্যে রয়েছে কল্পকাহিনিভিত্তিক দ্য ফরসাইট সেগা, জ্যাকব ব্রনোফস্কির দি অ্যাসেন্ট অফ ম্যান এবং কেনেথ ক্লার্কের সিভিলাইজেশন

১৯৬৮ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত তিনি সমগ্র বিবিসি-র টেলিভিশন প্রোগ্রামিং বিভাগের পরিচালক ছিলেন। কিন্তু বিবিসি-র সাধারণ পরিচালক পদের জন্য তাকে আহ্বান জানানোর সম্ভাবনা তৈরি হলে তিনি পদত্যাগ করেন, কারণ তার মূল আগ্রহ সরাসরি অনুষ্ঠান নির্মাণে, টেবিল-চেয়ারে বসে প্রশাসনিক কাজ করায় নয়।[] এরপর তিনি স্বাধীনভাবে ধারাবাহিক অনুষ্ঠান নির্মাণ শুরু করেন। প্রথমদিকে তিনি নৃবিজ্ঞান এবং প্রাকৃতিক ইতিহাসের উপর অনেকগুলো বহুল প্রশংসিত টিভি অনুষ্ঠানের রচনা, এবং ধারাবিবরণী করেছেন; যার মধ্যে রয়েছে লাইফ অন আর্থ, দ্য লিভিং প্ল্যানেট, দ্য ট্রায়ালস অফ লাইফ এবং দ্য লাইফ অফ বার্ডস। পরবর্তী ধারাবাহিকগুলোতে তাকে বিশ্ব উষ্ণায়নের উপর গুরুত্ব দিতে দেখা গেছে।[]

টেলিভিশন অনুষ্ঠান

[সম্পাদনা]

২০০৫ সালে বিবিসি ২৪টি ডিভিডির একটি সেট হিসেবে অ্যাটনবারার প্রাকৃতিক জীব-জন্তু বিষয়ক টিভি অনুষ্ঠানগুলো প্রকাশ করে। এগুলোকে একসাথে লাইফ সিরিজ বলা হয়। লাইফ সিরিজ আসলে অনেকগুলো টিভি ধারাবাহিকের সমষ্টি।

সিরিজের নাম বিষয় পর্ব সংখ্যা প্রতি পর্বের দৈর্ঘ্য (মিনিট) মূল চ্যানেল প্রচারের তারিখ
লাইফ অন আর্থ বিভিন্ন জীবের বিবর্তনের নিদর্শন প্রত্যক্ষ করার জন্য পৃথিবীর নানা প্রান্তে ভ্রমণ ১৩ ৫৫ বিবিসি ২ ১৯৭৯: ১৬ জানুয়ারি - ১০ এপ্রিল
দ্য লিভিং প্ল্যানেট কীভাবে বিভিন্ন জীব যার যার প্রতিবেশের সাথে অভিযোজন করে ১২ ৫৫ বিবিসি ১ ১৯৮৪: ১৯ জানুয়ারি - ১২ এপ্রিল
দ্য ট্রায়ালস অফ লাইফ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জীব যেসব বাঁধার সম্মুখীন হয় এবং নিজ বংশধারা চালু রাখে ১২ ৫০ বিবিসি ১ ১৯৯০: ৪ অক্টোবর - ২০ ডিসেম্বর
লাইফ ইন দ্য ফ্রিজার অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের ঋতুচক্র ৩০ বিবিসি ১ ১৯৯৩: ১৮ নভেম্বর - ২৩ ডিসেম্বর
দ্য প্রাইভেট লাইফ অফ প্ল্যান্টস উদ্ভিদের বৃদ্ধি, চলন, প্রজনন এবং আত্মরক্ষা কৌশল ৫০ বিবিসি ১ ১৯৯৫: ১১ জানুয়ারি - ১৫ ফেব্রুয়ারি
দ্য লাইফ অফ বার্ডস পাখির বিবর্তন এবং অভ্যাস ১০ ৫০ বিবিসি ১ ১৯৯৮: ২১ অক্টোবর - ২৩ ডিসেম্বর
দ্য লাইফ অফ ম্যামালস বিভিন্ন সরীসৃপ প্রজাতির বিবর্তন ও অভ্যাস ১০ ৫০ বিবিসি ১ ২০০২, ২০ নভেম্বর - ২০০৩, ৫ ফেব্রুয়ারি
লাইফ ইন দি আন্ডারগ্রোথ অমেরুদণ্ডী প্রাণীর বিবর্তন ও অভ্যাস ৫০ বিবিসি ১ ২০০৫: ২৩ নভেম্বর - ২১ ডিসেম্বর
লাইফ ইন কোল্ড ব্লাড উভচর এবং সরীসৃপ প্রাণীর বিবর্তন ও অভ্যাস ৫০ বিবিসি ১ ২০০৮: ৪ ফেব্রুয়ারি - ৩ মার্চ

রচনাবলি

[সম্পাদনা]
  • Zoo Quest to Guyana (১৯৫৬)
  • Zoo Quest for a Dragon (১৯৫৭) - ১৯৫৯ সালে পুনঃপ্রকাশিত
  • Zoo Quest in Paraguay (১৯৫৯)
  • Quest in Paradise (১৯৬০)
  • People of Paradise (১৯৬০)
  • Zoo Quest to Madagascar (১৯৬১)
  • Quest Under Capricorn (১৯৬৩)
  • Fabulous Animals (১৯৭৫)
  • The Tribal Eye (১৯৭৬)
  • Life on Earth (১৯৭৯)
  • Discovering Life on Earth (১৯৮১)
  • The Living Planet (১৯৮৪)
  • The First Eden: The Mediterranean World and Man (১৯৮৭)
  • The Atlas of the Living World (১৯৮৯)
  • The Trials of Life (১৯৯০)
  • The Private Life of Plants (১৯৯৪)
  • The Life of Birds (১৯৯৮)
  • The Life of Mammals (২০০২)
  • Life on Air: Memoirs of a Broadcaster (২০০২) - আত্মজীবনী
  • Life in the Undergrowth (২০০৫)
  • Amazing Rare Things: The Art of Natural History in the Age of Discovery (২০০৭) - সুজান ওয়েনস, মার্টিন ক্লেইটন ও রিয়া আলেকজান্ড্রাটোসের সাথে
  • Life in Cold Blood (২০০৭)
  • David Attenborough's Life Stories (২০০৯)
  • David Attenborough's New Life Stories (২০১১)
  • Drawn From Paradise: The Discovery, Art and Natural History of the Birds of Paradise (২০১২) - ইরল ফুলারের সাথে
  • Galapagos with David Attenbourough (দ্বিমাত্রিক সংস্করণ) অথবা Galapagos 3D (২০১২)

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Life on Air: David Attenborough's 50 Years in Television অ্যাটনবোরোর জীবন সম্পর্কে একটি বিবিসি প্রামাণ্য চিত্র
  2. Sir David Attenborough, এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা, ১৮ই মার্চ ২০১৩ তারিখে সংগৃহীত

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]