জেনার ডায়োড
জেনার ডায়োড হলো একটি বিশেষ প্রকারের ডায়োড যা সাধারণ ডায়োডের মতো তড়িৎ প্রবাহকে শুধুমাত্র সম্মুখ দিকে প্রবাহিত করে না, এটা বিপরীত দিকেও প্রবাহিত করে। যদি বিভবটা ব্রেকডাউন ভোল্টেজের মাত্রা ছাড়িয়ে যায়; এই ভোল্টেজকে জেনার ভোল্টেজ বলা হয়ে থাকে। এই যন্ত্রের নাম রাখা হয়েছে এই বৈদ্যুতিক বৈশিষ্ট্যের আবিষ্কারক ক্লারেন্স জেনারের নাম অনুসারে।
কার্য পদ্ধতি
[সম্পাদনা]একটি প্রথাগত সলিড স্টেট ডায়োড যা এটা যদি বিপরীত ঝোঁকে হয়ে থাকে তবে এর ব্রেক ডাউন ভোল্টেজের নিচে তড়িৎ প্রবাহিত হতে দেয় না। যখন বিপরীত ঝোঁকে ব্রেক ডাউন ভোল্টেজ অতিক্রান্ত হয় তখন প্রথাগত ডায়োডে অধিক পরিমাণে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। ফলে ডায়োডটা চিরতরে ধ্বংস হয়ে যাবে যদি না এই বিদ্যুৎ প্রবাহ ঐ বর্তনীর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। আবার সম্মুখ ঝোঁকে বেশি পরিমাণে তড়িৎ প্রবাহের ফলে ঐ ডায়োডের সংযোগের স্বয়ংক্রীয় বিভব এবং অন্তর্গত রোধের কারণে কিছু মাত্রায় বিভব পতন হয়। যে পরিমাণে বিভবের পতন হয় তা ব্যবহৃত অর্ধপরিবাহীর উপাদান এবং ডোপিং-এর ঘনত্বের ওপর নির্ভর করে।
একটি জেনার ডায়োড প্রায় একই ধরনের ধর্ম প্রদর্শন করে, তবে এতে খুবই কম ব্রেকডাউন ভোল্টেজ থাকে যাকে আবার জেনার ভোল্টেজও বলা হয়ে থাকে। একটা সাধারণ প্রথাগত ডায়োডের বিপরীতে একটি বিপরীত ঝোঁকে থাকা জেনার ডায়োড একটা নিয়ন্ত্রিত ব্রেকডাউন প্রদর্শন করে এবং বিদ্যুৎকে জেনার ডায়োডে জেনার ভোল্টেজ বজায় রাখতে সাহায্য করে। উদাহরণ স্বরূপঃ যদি একটা জেনার ডায়োডের ব্রেকডাউন ভোল্টেজ ৩.২ V হয়, তবে তার বিভবের পতন হবে ৩.২ V। এমনকি যদি এতে বিপরীত ঝোঁক প্রয়োগ করা হয় যা তার জেনার ভোল্টেজের চেয়েও বেশি। জেনার ডায়োড তাই রেফারেন্স ভোল্টেজ তৈরি করার জন্য একটা আদর্শ জিনিস যেমন একটা অ্যাম্পলিফায়ারের পর্যায়ের জন্য বা একটা ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার কম মাত্রায় প্রয়োগের জন্য। জেনার ডায়োডের কর্ম ক্ষমতা আবার এটার পি-এন সংযোগের ডোপিং-এর ওপরও নির্ভর করে যা পি টাইপের পদার্থের ভ্যালেন্স ব্যান্ড থেকে ইলেকট্রনকে এন-টাইপ পদার্থের পরিবাহী ব্যান্ডে নিয়ে আসবে। পরমাণু স্কেলে ভ্যালেন্স ব্যান্ড ইলেকট্রনের এই টানেলের মাধ্যমে খালি পরিবাহী ব্যান্ডে পরিবহন হলো এসব ব্যান্ডের মাঝে এবং উচ্চ তড়িৎ ক্ষেত্রের মাঝে বাধা কমানো যা উভয় প্রান্তে উচ্চ মাত্রার ডোপিং থাকার কারণে আবিষ্ট থাকে।[১] এই ব্রেক ডাউন ভোল্টেজকে আবার ডোপিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সহ্যসীমা ০.০৫%-এর ডায়োড সহজলভ্য, তবে বেশি মাত্রায় ব্যবহৃত সহ্যসীমা হলো ৫% থেকে ১০%। জেনার ডায়োডের ব্রেকডাউন ভোল্টেজ আবার ১ .২ V থেকে ২০০ V পর্যন্ত হয়ে থাকে। আরেকটা প্রক্রিয়া থেকে একই ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া তা হলো আভ্যালেঞ্চে প্রভাব যা আভ্যালেঞ্চে ডায়োডে থাকে।আসলে একই ভাবে ২ ধরনের ডায়োড প্রস্তুত করা হয় এবং এ ধরনের ডায়োডে উভয় প্রভাবই বর্তমান থাকে। সিলিকন ডায়োড যার বিভব প্রায় ৫.৬ ভোল্ট, এতে জেনার প্রভাব খুব ভালো ভাবেই থাকে এবং একটা ঋণাত্নক তাপমাত্রা সহগ নির্দেশ করে। ৫.৬ ভোল্টের ওপরে আভ্যালেঞ্চে প্রভাব বেশি মাত্রায় থাকে এবং একটা ধনাত্নক তাপমাত্রা সহগ নির্দেশ করে।[১] একটা ৫.৬ ভোল্টের ডায়োডে এই ২টি প্রভাবই বিদ্যমান থাকে এবং তাদের তাপমাত্রা সহগ একে অপরকে বাতিল করে দেয়। তাই ৫.৬ ভোল্টের ডায়োড তাপমাত্রা সংক্রান্ত প্রয়োগে বেশি পছন্দনীয়।আধুনিক প্রস্তুত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এমন ডিভাইস তৈরি করা যায় যার বিভব থাকে ৫.৬ V সাথে খুব কম তাপমাত্রা সহগ।কিন্তু উভয় বিভবের যন্ত্রে তাপমাত্রা সহগ বেশি থাকে। একটি ৭৫ V ডায়োডের তাপমাত্রা সহগ থাকে ১২ V ডায়োডের থেকে ১০ গুণ বেশি ।
এই সমস্ত ডায়োড যারা তাদের ব্রেকডাউন ভোল্টেজকে ধর্তব্যের মধ্যে ধরে না আমরা তাদেরকে "জেনার ডায়োড" হিসেবে চিহ্নিত করতে পারি।
ব্যবহার
[সম্পাদনা]জেনার ডায়োড আসলে ব্যবহৃত হয় ভোল্টেজ রেফারেন্স এবং শান্ট রেগুলেটর হিসেবে; যা বিভবকে পরিচালনা করে একটি ছোট্ট বর্তনীতে। যখন এটা একটি পরিবর্তনশীল বিভবের উৎসের সাথে প্যারালাল ভাবে বিপরীত ঝোঁকে ব্যবহার করা হয় এবং যখন ভোল্টেজ ডায়োডের বিপরীত ব্রেকডাউন ভোল্টেজে গিয়ে পৌঁছে তখন জেনার ডায়োড তড়িৎ পরিবহন শুরু করে। ডায়োডের তুলনামূলকভাবে কম ইম্পিডেন্স ডায়োডের বিভবকে সেই মানে রাখে।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] কীভাবে জেনার ডায়োড ব্যবহার করতে হয়[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ Richard C. Dorf (ed.) The Electrical Engineering Handbook, CRC Press, Boca Raton, 1993, আইএসবিএন ০-৮৪৯৩-০১৮৫-৮ pg.457 উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "Dorf93" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে