বিষয়বস্তুতে চলুন

জিওফ্রে বয়কট

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জিওফ্রে বয়কট
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
জিওফ্রে বয়কট
জন্ম (1940-10-21) ২১ অক্টোবর ১৯৪০ (বয়স ৮৪)
ফিৎজউইলিয়াম, ওয়েস্ট রাইডিং অব ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড
ডাকনামবয়েকস, জিওফ, ফাইরি, জিএলওয়াই (গ্রেটেস্ট লিভিং ইয়র্কশায়ারম্যান), স্যার জিওফ্রে[] থ্যাচ[]
উচ্চতা৫ ফুট ১০ ইঞ্চি (১.৭৮ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি ব্যাটসম্যান
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাউদ্বোধনী ব্যাটসম্যান, অধিনায়ক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪২২)
৪ জুন ১৯৬৪ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট১ জানুয়ারি ১৯৮২ বনাম ভারত
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ )
৫ জানুয়ারি ১৯৭১ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ ওডিআই২০ ডিসেম্বর ১৯৮১ বনাম ভারত
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৬২-৮৬ইয়র্কশায়ার
১৯৭১-৭২নর্দার্ন ট্রান্সভাল
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ১০৮ ৩৬ ৬০৯ ৩১৩
রানের সংখ্যা ৮১১৪ ১০৮২ ৪৮৪২৬ ১০০৯৫
ব্যাটিং গড় ৪৭.৭২ ৩৬.০৬ ৫৬.৮৩ ৩৯.১২
১০০/৫০ ২২/৪২ ১/৯ ১৫১/২৩৮ ৮/৭৪
সর্বোচ্চ রান ২৪৬* ১০৫ ২৬১* ১৪৬
বল করেছে ৯৪৪ ১৬৮ ৩৬৮৫ ১৯৭৫
উইকেট ৪৫ ৩০
বোলিং গড় ৫৪.৫৭ ২১.০০ ৩২.৪২ ৪০.২৬
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/৪৭ ২/১৪ ৪/১৪ ৩/১৫
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৩৩/– ৫/– ২৬৪/– ৯৯/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৯ এপ্রিল ২০১৪

জিওফ্রে বয়কট, ওবিই (ইংরেজি: Geoffrey Boycott; জন্ম: ২১ অক্টোবর, ১৯৪০) ফিৎজউইলিয়াম এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ও সাবেক ইংরেজ ক্রিকেট তারকা। তিনি ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের হয়ে টেস্ট ও একদিনের আন্তর্জাতিকে খেলেছেন। ১৯৬২ থেকে ১৯৮৬ সালের মধ্যে তার বর্ণাঢ্য ও পাশাপাশি ক্ষাণিকটা বিতর্কিত খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। বয়কট ইংল্যান্ডের সর্বাপেক্ষা সফলতম উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।[]

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ইযর্কশায়ার ক্লাবের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর নেয়ার পর তিনি ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার হিসেবেও সফলতার মুখ দেখেছেন।

খেলোয়াড়ী জীবন

[সম্পাদনা]

অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের বিপক্ষে ১৯৬৪ সালে অনুষ্ঠিত টেস্টের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে বয়কটের।[][] ক্রিজের একপ্রান্ত দখল করে তিনি তার সক্ষমতা প্রদর্শন করেছেন ও ইংল্যান্ডের টেস্ট ব্যাটিং লাইন-আপে অনেক বছর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু সীমিত ওভারের একদিনের আন্তর্জাতিক (ওডিআই)-এ তিনি তেমন সফলতা লাভ করতে পারেননি।[] প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের ইতিহাসে ৫ম সর্বাধিকসংখ্যক সেঞ্চুরি করেন ও ৮ম সর্বাধিক রান সংগ্রহকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ১৯৭৭ সালের অ্যাশেজ টেস্টে জিওফ বয়কট তার নিজস্ব শততম প্রথম-শ্রেণীর শতক হাঁকান। চারদিন পর ঐ খেলায় ইংল্যান্ড জয় পায়। পাশাপাশি সিরিজ জয় করে অ্যাশেজ করায়ত্ত্ব করে।

প্রথম ইংরেজ ক্রিকেটার হিসেবে ১৯৭১ ও ১৯৭৯ মৌসুমে ১০০ রানের অধিক গড়ের অধিকারী ছিলেন বয়কট। কিন্তু তিনি প্রায়শঃই তার সতীর্থ খেলোয়াড়দের সাথে বাদানুবাদে জড়িত হয়ে পড়তেন।[][][] ক্রীড়া সাংবাদিক ইয়ান ওলড্রিজ তার সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন যে, ‘বয়কট খাঁটো হলেও চলতেন একাকী’।[] ইংল্যান্ডের পক্ষে ১০৮ টেস্ট খেলায় অংশগ্রহণের পর ১৯৮২ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গন থেকে অবসর গ্রহণ করেন বয়কট। এসময় তিনি আট সহস্রাধিক রান সংগ্রহের মাধ্যমে শীর্ষস্থানীয় টেস্ট ব্যাটসম্যান ছিলেন।[১০]

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

১৯৭১ থেকে ১৯৭৮ সময়কালে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে আট মৌসুম অধিনায়কত্ব করেন। ১৯৭০ সালে ব্রায়ান ক্লোজের পদত্যাগের পর তাকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়। এ দু’জনের মধ্যে প্রায়শঃই তর্কাতর্কির খবরাখবর প্রকাশিত হতো। ১৯৮৭ সালে ক্লোজের ক্লাব থেকে বিতাড়নের বিষয়ে দুঃখপ্রকাশ করে বিবৃতি দেন এবং ইয়র্কশায়ারে তার অবদানের কথা স্বীকার করে পত্র লিখেন।[১১] ১৯৬২ সালে কাউন্টি ক্রিকেটে খেলোয়াড়ী জীবন শুরু করার পর তার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল ইয়র্কশায়ারের অধিনায়কের দায়িত্ব লাভ করা।[১২]

১৯৭৮ সালের গ্রীষ্মে বয়কটের আঙ্গুল ভেঙ্গে গেলে জন হ্যাম্পশায়ারকে সাময়িকভাবে ক্লাবের অধিনায়কের দায়িত্বভার অর্পণ করা হয়। ঐ মৌসুম শেষে বয়কট দলে ফিরে আসেন ও ৫০.৯৪ গড়ে ৯৬৮ রান তুলেন। কিন্তু তার ঐ সংগ্রহ হ্যাম্পশায়ারের ৫৪.১৮ গড়ে ১,৪৬৩ রানের তুলনায় কম ছিল। ড্রেসিং রুমের ৯৫% খেলোয়াড় স্থায়ীভাবে অধিনায়কের দাবী জানাচ্ছিল।[১৩] ১৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৮ তারিখে বয়কটের মাতা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দেহাবসান ঘটে। ২৯ সেপ্টেম্বর ইয়র্কশায়ার ক্লাব কর্তৃপক্ষ বয়কটের অধিনায়কত্ব স্থগিতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। এতে বয়কটকে খেলোয়াড় হিসেবে রেখে হ্যাম্পশায়ারকে নেতৃত্ব প্রদানের কথা বলা হয়।[১৪] এর জবাবে ৭ অক্টোবর বয়কট বিবিসি’র ফ্লাগশীপ চ্যাটশো পার্কিনসনে ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে কথা বলেন। ফলশ্রুতিতে ক্লাব কর্তৃপক্ষ ব্যাপকভাবে তাঁর সমালোচনা করে ও তাঁর অবস্থানের বিষয়ে শক্ত জনমত গড়ে উঠে।[১৫][১৬]

১৯৮৬ সালে ইয়র্কশায়ার দল থেকে বিদায় নেয়ার সময়ও তিনি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে শীর্ষস্থানীয় রান সংগ্রহকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন।

টেস্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ইংরেজ ক্রিকেটার
খেলোয়াড় টেস্ট রান সর্বোচ্চ গড় সেঞ্চুরি
অ্যালাস্টেয়ার কুক ১২৬ ৯,৯৬৪ ২৯৪ ৪৬.৫৬ ২৮
গ্রাহাম গুচ ১১৮ ৮,৯০০ ৩৩৩ ৪২.৫৮ ২০
অ্যালেক স্টুয়ার্ট ১৩৩ ৮,৪৬৩ ১৯০ ৩৯.৫৪ ১৫
ডেভিড গাওয়ার ১১৭ ৮,২৩১ ২১৫ ৪৪.২৫ ১৮
কেভিন পিটারসন ১০৪ ৮,১৮১ ২২৭ ৪৭.২৮ ২৩
জিওফ্রে বয়কট ১০৮ ৮,১১৪ ২৪৬* ৪৭.৭২ ২২
মাইকেল অ্যাথারটন ১১৫ ৭,৭২৮ ১৮৫* ৩৭.৬৯ ১৬
ইয়ান বেল ১১৮ ৭,৭২৭ ২৩৫ ৪২.৬৯ ২২
কলিন কাউড্রে ১১৪ ৭,৬২৪ ১৮২ ৪৪.০৬ ২২
ওয়ালি হ্যামন্ড ৮৫ ৭,২৪৯ ৩৩৬* ৫৮.৪৫ ২২

সম্মাননা

[সম্পাদনা]

তরুণ অবস্থায় ১৯৬৫ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটারে ভূষিত হন। ২০০৯ সালে তাঁকে আইসিসি ক্রিকেট হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[১৭] ক্রিকেট খেলার তাঁর অসামান্য ভূমিকার ফলে অর্ডার অব ব্রিটিশ এম্পায়ার পদবীতে ভূষিত হন।[][১৮][১৯]

খেলোয়াড়ী জীবন শেষে তিনি রেডিও এবং টেলিভিশনে ধারাভাষ্যকারের কাজ নেন। ২০০২ সালে কণ্ঠনালীর ক্যান্সারে আক্রান্ত হন ও আরোগ্যলাভ করেন। ২০০৩ সালে তিনি পুনরায় কাজে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি বিবিসি রেডিও ফোর লংওয়েভের টেস্ট ম্যাচ স্পেশালের ধারাভাষ্যকার দলের সদস্য। মার্চ, ২০১২ সালে তিনি ইয়র্কশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের সভাপতি হয়েছিলেন যা মার্চ, ২০১৪ সালে ডিকি বার্ড তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন।[][১৮][২০]

টেস্ট শতকসমূহ

[সম্পাদনা]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. McKinstry, pp. ix–i.
  2. President's XI v England XI at Bridgetown, 23–26 January 1974 CricInfo. Retrieved 23 March 2008.
  3. Barratt, Nick (১৬ জুন ২০০৭)। "Family detective: Geoffrey Boycott"The Daily Telegraph। UK। ৫ মে ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মার্চ ২০০৮ 
  4. Greenslade, Nick (৪ জুলাই ২০০৪)। "First and last"The Guardian। London। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০০৯ 
  5. Hill and Williams, p. 150.
  6. McKinstry, p. 163.
  7. "Records / First-class matches / Batting records / Most hundreds in a career"। CricInfo। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০০৯ 
  8. Arnold, Peter; Wynne-Thomas, Peter (২০০৬)। The Complete Encyclopeaedia of Cricket (3rd সংস্করণ)। Carlton। পৃষ্ঠা 175। আইএসবিএন 978-1-84732-284-5 
  9. Meher-Homji, p. 21.
  10. "G Boycott Test matches – Batting analysis"। CricInfo। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০০৯ 
  11. Boycott, p. 146.
  12. McKinstry, p. 121.
  13. McKinstry, p. 179.
  14. McKinstry, p. 180.
  15. Hopps, p. 240.
  16. McKinstry, pp. 181–182.
  17. "ICC Hall of Fame"। ICC। ৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০০৯ 
  18. "Geoffrey Boycott accuses England cricket flops of devaluing MBE"। This Is London (Evening Standard)। ২২ জুলাই ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০০৯ 
  19. "নং. 48212"দ্যা লন্ডন গেজেট (সম্পূরক) (ইংরেজি ভাষায়): 9–10। ১৩ জুন ১৯৮০। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০০৮ 
  20. Harmison, Steven (২২ মার্চ ২০০৮)। "Boycott? He's got no status with us, he's just a Yorkshire accent"। London: Mail On Sunday। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০০৯ 

মুদ্রিত

[সম্পাদনা]

অন-লাইনভিত্তিক

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]
পূর্বসূরী
মাইক ব্রিয়ারলি
ইংল্যান্ড জাতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক
(সহকারী ১৯৭৭-৭৮)
উত্তরসূরী
মাইক ব্রিয়ারলি