বিষয়বস্তুতে চলুন

ওয়েন্ডি হিলার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ওয়েন্ডি হিলার

Wendy Hiller
সেইলর অব দ্য কিং (১৯৫৩) ছবিতে হিলার
জন্ম
ওয়েন্ডি মার্গারেট হিলার

(১৯১২-০৮-১৫)১৫ আগস্ট ১৯১২
মৃত্যু১৪ মে ২০০৩(2003-05-14) (বয়স ৯০)
বিকনসফিল্ড, বাকিংহামশায়ার, ইংল্যান্ড
জাতীয়তাইংরেজ
পেশাঅভিনেত্রী
কর্মজীবন১৯৩৫-১৯৯৩
দাম্পত্য সঙ্গীরোনাল্ড গাউ (বি. ১৯৩৭; মৃ. ১৯৯৩)
পুরস্কারএকাডেমি পুরস্কার

ডেম ওয়েন্ডি মার্গারেট হিলার, ডিবিই (ইংরেজি: Dame Wendy Margaret Hiller, ১৫ই আগস্ট ১৯১২ - ১৪ই মে ২০০৩) ছিলেন একজন ইংরেজ অভিনেত্রী। তিনি প্রায় ষাট বছর চলচ্চিত্র ও মঞ্চে অভিনয় করেছেন। লেখক জোয়েল হির্শচর্ন তার ১৯৮৪ সালের রেটিং দ্য মুভি স্টারস সংকলনে তাকে "বুদ্ধিদীপ্ত অভিনেত্রী যিনি কোন চলচ্চিত্রে কাজ করলে পর্দায় কর্তৃত্ব স্থাপন করতে পারতেন" বলে উল্লেখ করেন। চলচ্চিত্রে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ভূমিকায় কাজ করলেও তিনি মঞ্চেই কাজ করে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন।

হিলার ১৯৩৮ সালে পিগম্যালিয়ন চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে তার প্রথম একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। ১৯৫৮ সালে সেপারেট টেবলস্‌ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন।[] তার পরবর্তী উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হল সন্স অ্যান্ড লাভরস (১৯৬০), টয়েজ ইন দ্য অ্যাটিক (১৯৬৩) ও আ ম্যান ফর অল সিজনস্‌ (১৯৬৬)। শেষোক্ত চলচ্চিত্রের জন্য তিনি অপর একটি একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।

ব্রিটেনের অন্যতম সেরা নাট্য প্রতিভার স্বীকৃতি হিসেবে তাকে ১৯৭১ সালে অফিসার অব দি অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (ওবিই) ও ১৯৭৫ সালে ডেম কমান্ডার (ডিবিই) সম্মাননায় ভূষিত করা হয়।[][]

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

হিলার ১৯১২ সালের ১৫ই আগস্ট চেশায়ারের ব্রামহলে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ফ্র্যাংক ওয়াটকিন হিলার ম্যানচেস্টারের তুলা উৎপাদনকারী এবং মাতা ম্যারি এলিজাবেথ স্টোন। হিলারের তিন ভাই ছিল। তারা হলেন রেনে, মাইকেল ও জন হিলার।[] তার উত্তর ইংল্যান্ডের উচ্চারণ ভঙ্গি পরিবর্তনের জন্য তার পিতা তাকে দক্ষিণ ইংল্যান্ডের বেক্সহিলের উইন্সবি হাউজ স্কুলে ভর্তি করান।[][] হিলার ১৯৩০-এর দশকের শুরুতে ম্যানচেস্টারে রিপার্টরিতে অভিনেত্রী হিসেবে তার পেশাদার কর্মজীবন শুরু করেন।[] তিনি ওয়াল্টার গ্রিনউডের উপন্যাস অবলম্বনে মঞ্চস্থ লাভ অন দ্য ডোল (১৯৩৪) মঞ্চনাটকে বসতিবাসী স্যালি হার্ডক্যাসল চরিত্রে অভিনয় করে প্রথম সফলতা অর্জন করেন।[] নাটকটিও ব্যাপক সফলতা অর্জন করে এবং ব্রিটেনের বিভিন্ন আঞ্চলিক মঞ্চে সফরে যায়। এই নাটকের সফলতার দিয়ে ১৯৩৫ সালে লন্ডনের গ্যারিক থিয়েটারে ওয়েস্ট এন্ড মঞ্চে এবং ১৯৩৬ সালে নিউ ইয়র্কে ব্রডওয়ে মঞ্চে তার অভিষেক হয়।[] তিনি ১৯৩৭ সালে নাট্যকার রোনাল্ড গো'য়ের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। গো তার থেকে ১৫ বছরের বড় ছিলেন।

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]
পিগম্যালিয়ন (১৯৩৮) চলচ্চিত্রে স্কট সাদারল্যান্ড, লেসলি হাওয়ার্ড ও হিলার।

১৯৩৭ সালে তার স্বামীর গো'য়ের গল্প অবলম্বনে নির্মিত ল্যাঙ্কেশায়ার লাক চলচ্চিত্র দিয়ে তার বড়পর্দায় অভিষেক হয়। পরের বছর তিনি পিগম্যালিয়ন (১৯৩৮) চলচ্চিত্রে লেসলি হাওয়ার্ডের বিপরীতে অভিনয় করেন। মাত্র বিশ বছর বয়সে এই চলচ্চিত্রের এলিজা ডুলিটল চরিত্রে অভিনয় করে তিনি আন্তর্জাতিক তারকা হয়ে ওঠেন[] এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। তিনি প্রথম ব্রিটিশ অভিনেত্রী, যিনি ব্রিটিশ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে একাডেমি পুরস্কারে মনোনীত হন এবং প্রথম অভিনেত্রী, যিনি কোন ব্রিটিশ চলচ্চিত্র "ব্লাডি" শব্দটি উচ্চারণ করেন।

১৯৫৮ সালে সেপারেট টেবলস্‌ চলচ্চিত্রে বার্ট ল্যাঙ্কেস্টারের বিপরীতে তার চরিত্রের স্ত্রী ও হোটেলের ব্যবস্থাপকের ভূমিকায় অভিনয় করে তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন।[][] তিনি সন্স অ্যান্ড লাভরস (১৯৬০) চলচ্চিত্রে তীব্র শাসন ও কর্তৃত্ব স্থাপনকারী মাতা চরিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেত্রী বিভাগে বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[] টয়েজ ইন দ্য অ্যাটিক (১৯৬৩) চলচ্চিত্রে তিনি তার লন্ডন মঞ্চে করা একই চরিত্রে অভিনয় করেন। এতে মূখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন ডিন মার্টিনজেরাল্ডিন পেজ। এই ছবিতে কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[]

আ ম্যান ফর অল সিজনস্‌ (১৯৬৬) চলচ্চিত্রে পল স্কোফিল্ডের বিপরীতে লেডি অ্যালিস মুর চরিত্রে অভিনয় করেন। তার সহজ-সরল, অপরিশোধিত কিন্তু সম্মানীত এই কাজের জন্য তিনি তার তৃতীয় একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। মার্ডার অন দি অরিয়েন্ট এক্সপ্রেস (১৯৭৪) ছবিতে রুশ যুবরাজ্ঞী চরিত্রে তার অভিনয় তাকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি এনে দেয়[] এবং তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ইভনিং স্ট্যান্ডার্ড ব্রিটিশ চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। পরবর্তীকালে তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল ভয়েজ অব দ্য ডেমড (১৯৭৬), ডেভিড লিঞ্চের দি এলিফ্যান্ট ম্যান (১৯৮০) এবং দ্য লোনলি প্যাসন অব জুডিথ হির্ন (১৯৮৭)।[]

মৃত্যু

[সম্পাদনা]

হিলার ২০০৩ সালের ১৪ই মে বিকন্সফিল্ডে তার নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন।[]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Awards for Separate Tables"টার্নার ক্লাসিক মুভিজ। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০১৮ 
  2. "Obituary: Dame Wendy Hiller"দ্য গার্ডিয়ান (ইংরেজি ভাষায়)। ১৬ মে ২০০৩। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১৮ 
  3. "Dame Wendy Hiller"দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ (ইংরেজি ভাষায়)। ১৫ মে ২০০৩। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১৮ 
  4. "Wendy Hiller, Spirited Actress, Dies at 90"দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। ১৭ মে ২০০৩। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১৮ 
  5. "BAFTA Awards"বাফটা (ইংরেজি ভাষায়)। ব্রিটিশ একাডেমি অব ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন আর্টস। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১৮ 
  6. "Wendy Hiller"গোল্ডেন গ্লোব (ইংরেজি ভাষায়)। হলিউড ফরেন প্রেস অ্যাসোসিয়েশন। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১৮ 
  7. উডস, অড্রি (১৮ মে ২০০৩)। "British Actress Dame Wendy Hiller Dies at 90"দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১৮ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]