ষষ্ঠ মুহাম্মদ
ষষ্ঠ মুহাম্মদ | |
---|---|
ইসলামের খলিফা আমিরুল মুমিনিন উসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতান খাদেমুল হারামাইন শরিফাইন | |
উসমানীয় খলিফা | |
খিলাফত | ৩ জুলাই ১৯১৮ – ১৯ নভেম্বর ১৯২২ |
পূর্বসূরি | পঞ্চম মুহাম্মদ |
উত্তরসূরি | দ্বিতীয় আবদুল মজিদ |
৩৬তম ও সর্বশেষ উসমানীয় সুলতান | |
রাজত্ব | ৩ জুলাই ১৯১৮ – ১ নভেম্বর ১৯২২ |
অভিষেক | ৪ জুলাই ১৯১৮ |
পূর্বসূরি | পঞ্চম মুহাম্মদ |
উত্তরসূরি | সাম্রাজ্য বিলুপ্ত |
উজিরে আজম | |
উসমান পরিবারের প্রধান (নির্বাসিত) | |
মেয়াদ | ১৯ নভেম্বর ১৯২২ – ১৬ মে ১৯২৬ |
পূর্বসূরি | পঞ্চম মুহাম্মদ |
উত্তরসূরি | দ্বিতীয় আবদুল মজিদ |
জন্ম | কনস্টান্টিনোপল, উসমানীয় সাম্রাজ্য | ১৪ জানুয়ারি ১৮৬১
মৃত্যু | ১৬ মে ১৯২৬ সানরেমো, ইতালি | (বয়স ৬৫)
সমাধি | |
স্ত্রী | নাজিকেদা কাদিনেফেন্দি ইনশিরাহ হানিমেফেন্দি মুভেদ্দেত কাদিনেফেন্দি নেভারে হানিমেফেন্দি নেভজেদ হানিমেফেন্দি |
বংশধর | প্রথম স্ত্রীর সন্তান: প্রিন্সেস মুনিরে সুলতান প্রিন্সেস ফেনিরে সুলতান প্রিন্সেস ফাতমা উলভিয়ে সুলতান প্রিন্সেস রুকিয়ে সাবিহা সুলতান হানিম এফেন্দি তৃতীয় স্ত্রীর সন্তান: প্রিন্স মুহাম্মদ এরতুগরুল এফেন্দি |
রাজবংশ | উসমানীয় |
পিতা | প্রথম আবদুল মজিদ |
মাতা | গুলুসতু কাদিনেফেন্দি |
ধর্ম | ইসলাম |
তুগরা |
ষষ্ঠ মুহাম্মদ (উসমানীয় তুর্কি: محمد السادس মেহমেদ-ই-সাদিস)(Altinci Mehmet)(১৪ জানুয়ারি ১৮৬১ – ১৬ মে ১৯২৬) ছিলেন উসমানীয় সাম্রাজ্যের ৩৬তম ও সর্বশেষ সুলতান। তিনি ১৯১৮ থেকে ১৯২২ সাল পর্যন্ত সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন। সাবেক সুলতান আবদুল আজিজের পুত্র ও সিংহাসনের উত্তরাধিকারী ইউসুফ ইজ্জউদ্দিন এফেন্দি ১৯১৬ সালে আত্মহত্যা করার ফলে উসমানীয় পরিবারের জ্যেষ্ঠ পুরুষ সদস্য হিসেবে ষষ্ঠ মুহাম্মদ তার ভাই পঞ্চম মুহাম্মদের উত্তরসুরি হন।[১] ১৯১৮ সালের ৪ জুন উসমানের তলোয়ার গ্রহণের মাধ্যমে তিনি ৩৬তম বাদশাহ হিসেবে অভিষিক্ত হন। সুলতান প্রথম আবদুল মজিদ ছিলেন তার বাবা। তার মা গুলুসতু কাদিনেফেন্দি ছিলেন একজন আবখাজিয়ান নারী।[২] ১৯২২ সালে উসমানীয় সাম্রাজ্য বিলুপ্ত হওয়ার পর তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন।
জীবনী
[সম্পাদনা]ষষ্ঠ মুহাম্মদ ইস্তানবুলের দলমাবাচ প্রাসাদে জন্মগ্রহণ করেন।[৩][৪]
শাসনকাল
[সম্পাদনা]প্রথম বিশ্বযুদ্ধ উসমানীয়দের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনে। ব্রিটিশ ও মিত্রবাহিনী যুদ্ধে বাগদাদ, দামেস্ক ও জেরুজালেম অধিকার করে নেয়। সাম্রাজ্যের অধিকাংশ অঞ্চল ইউরোপীয় মিত্রবাহিনী নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছিল। ১৯২০ সালের এপ্রিলে সান রেমো সম্মেলনে ফ্রান্স সিরিয়ার এবং যুক্তরাজ্য ফিলিস্তিন ও মেসোপটেমিয়ার মেন্ডেট লাভ করে। ১৯২০ সালের ১০ আগস্ট সুলতানের প্রতিনিধিরা সেভ্র চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই চুক্তিতে মেন্ডেটকে স্বীকার করা হয় এবং হেজাজকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।
তুর্কি জাতীয়তাবাদিরা এই চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে। ১৯২০ সালের ২৩ এপ্রিল আঙ্কারায় মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠিত হয়। এই নতুন সরকার সুলতান ষষ্ঠ মুহাম্মদের নিন্দা জানায় এবং একটি অস্থায়ী সংবিধান প্রণয়ন করে।
নির্বাসন ও মৃত্যু
[সম্পাদনা]১৯২২ সালের ১ নভেম্বর তুরস্কের গ্র্যান্ড ন্যাশনাল এসেম্বলি সালতানাত বিলুপ্ত ঘোষণা করে এবং মুহাম্মদকে কনস্টান্টিনোপল থেকে নির্বাসিত করা হয়। ১৭ নভেম্বর যুক্তরাজ্যের যুদ্ধজাহাজ মালায়া করে তিনি দেশত্যাগ করেন এবং মাল্টায় নির্বাসিত হন। পরবর্তীতে তিনি ইতালীয় রিভিয়েরায় বসবাস করেছেন।
১৯ নভেম্বর মুহাম্মদের চাচাত ভাই দ্বিতীয় আবদুল মজিদ খলিফা হন। ১৯২৪ সালে গ্র্যান্ড ন্যাশনাল এসেম্বলি খিলাফত বিলুপ্ত করার পূর্ব পর্যন্ত তিনি খলিফা ছিলেন।
ষষ্ঠ মুহাম্মদ ১৯২৬ সালের ১৬ মে ইতালির সানরেমোয় মৃত্যুবরণ করেন। দামেস্কের তেকিয়ে মসজিদে তাকে দাফন করা হয়।[৫]
বিয়ে ও সন্তান
[সম্পাদনা]ষষ্ঠ মুহাম্মদ পাঁচবার বিয়ে করেছেন। তার স্ত্রী ও সন্তানেরা হলেন:
- এমিনে নাজিকেদা কাদিনেফেন্দি (৯ অক্টোবর ১৮৬৬ - ৪ এপ্রিল ১৯৪১): ১৮৮৫ সালের ৮ জুন তাদের বিয়ে হয়। এই দম্পতির চারজন কন্যাসন্তান ছিল:
- প্রিন্সেস মুনিরে সুলতান (১৮৮৬-১৮৮৮)
- প্রিন্সেস ফেনিরে সুলতান (১৮৮৮-১৮৮৮)
- প্রিন্সেস ফাতমা উলভিয়ে সুলতান (১১ সেপ্টেম্বর ১৮৯২ - ২৫ জানুয়ারি ১৯৬৭)
- প্রিন্সেস রুকিয়ে সাবিহা সুলতান হানিম এফেন্দি (১৯ মার্চ/১ এপ্রিল ১৮৯৪ - ২৬ আগস্ট ১৯৭১)
- ইনশিরাহ হানিমেফেন্দি (১০ জুলাই ১৮৮৭ - ৩০ জুন ১৯৩০): ১৯০৫ সালের ৮ জুলাই তাদের বিয়ে হয় এবং ১৯০৯ সালের ৭ নভেম্বর তাদের তালাক হয়। তাদের কোনো সন্তান ছিল না।
- মুভেদ্দেত কাদিনেফেন্দি (১২ অক্টোবর ১৮৯৩ - ১৯৫১): ১৯১১ সালের ২৫ এপ্রিল তাদের বিয়ে হয়। তাদের একজন পুত্রসন্তান ছিল:
- প্রিন্স মুহাম্মদ এরতুগরুল এফেন্দি (৫ সেপ্টেম্বর ১৯১২ - ২ জুলাই ১৯৪৪)
- নেভারে হানিমেফেন্দি (৪ মে ১৯০১ - ১৩ জুন ১৯৯২): ১৯১৮ সালের ২০ জুন তাদের বিয়ে হয় এবং ১৯২৪ সালের ২০ মে তাদের তালাক হয়। তাদের কোনো সন্তান ছিল না।
- নেভজাদ হানিমেফেন্দি (২ মার্চ ১৯০০ - ২৩ জুন ১৯৯২): ১৯২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর তাদের বিয়ে হয়। তাদের কোনো সন্তান ছিল না।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Freely, John, Inside the Seraglio, 1999, Chapter 16: The Year of Three Sultans.
- ↑ Harun Açba (২০০৭)। Kadın efendiler: 1839-1924। Profil। আইএসবিএন 978-9-759-96109-1।
- ↑ Chisholm, Hugh, সম্পাদক (১৯১১), The Encyclopædia Britannica, 7 (3),
Constantinople, the capital of the Turkish Empire
. - ↑ Britannica, Istanbul ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৮ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে:When the Republic of Turkey was founded in 1923, the capital was moved to Ankara, and Constantinople was officially renamed Istanbul in 1930.
- ↑ Freely, John, Inside the Seraglio, published 1999, Chapter 19: The Gathering Place of the Jinns
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]- Fromkin, David, 1989. A Peace to End All Peace: The Fall of the Ottoman Empire and the Creation of the Modern Middle East আইএসবিএন ০-৮০৫০-০৮৫৭-৮
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]উইকিমিডিয়া কমন্সে ষষ্ঠ মুহাম্মদ সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।
ষষ্ঠ মুহাম্মদ জন্ম: ১৪ জানুয়ারি ১৮৬১ মৃত্যু: ১৬ মে ১৯২৬
| ||
শাসনতান্ত্রিক খেতাব | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী পঞ্চম মুহাম্মদ |
উসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতান ৩ জুলাই ১৯১৮ – ১ নভেম্বর ১৯২২ |
উত্তরসূরী সালতানাত বিলুপ্ত |
সুন্নি ইসলাম পদবীসমূহ | ||
পূর্বসূরী পঞ্চম মুহাম্মদ |
ইসলামের খলিফা ৩ জুলাই ১৯১৮ – ১৯ নভেম্বর ১৯২২ |
উত্তরসূরী দ্বিতীয় আবদুল মজিদ |
Titles in pretence | ||
পূর্বসূরী সালতানাত বিলুপ্ত |
— TITULAR — উসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতান ১ নভেম্বর ১৯২২ – ১৯ নভেম্বর ১৯২২ |
দ্বিতীয় আবদুল মজিদ |