মামলুক
মামলুক (مملوك) দ্বারা রাজার “সম্পত্তি” বা “অধীন দাস” বোঝানো হয়।
আরো নির্দিষ্টভাবে, মামলুক দ্বারা বোঝায়,
- খোয়ারিজমীয় রাজবংশ (পারস্য) (১০৭৭-১২৩১)
- মামলুক সালতানাত (দিল্লি) (১২০৬-১২৯০)
- মামলুক সালতানাত (কায়রো) (১২৫০-১৫১৭)
- ইরাকের মামলুক রাজবংশ (১৭০৪-১৮৩১, উসমানীয় ইরাকের অধীন)
মিশরের মামলুকরা সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী মামলুক শাসন কায়েম করে। কিপচাক ও অন্যান্য অনেক তুর্কীয় জনগোষ্ঠী থেকে সংগৃহীত দাস সৈনিকদের মধ্য থেকে এই শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।[১] এই দাসরা ছিল সিরকাসিয়ান[২] ও জর্জিয়ান[৩][৪][৫] বংশোদ্ভূত। তবে বুরজি মামলুক সালতানাতে বলকান (আলবেনিয়ান, গ্রীক ,দক্ষিণ স্লাভিক) বংশোদ্ভূত অনেক মামলুক ছিল।
মামলুকরা সরাসরি সুলতানের তত্ত্বাবধানে দীক্ষা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতেন। সুলতান তাদের জন্য নীলনদের রাওজা দ্বীপে একটি সামরিক ঘাঁটি নির্মাণ করে দেন। এখানে মামলুকরা সামরিক প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ধর্মীয় ও আদর্শিক দীক্ষাও গ্রহণ করতেন।
মামলুকদের মধ্যে একে অপরের সাথে অনেক ভালো সম্পর্ক ছিল। সহপাঠীদের মধ্যে ছিল 'খুশদাশিয়া' বা সাথী সম্পর্ক। আর মনিবদের সাথে ছিল ছাত্র-উস্তাদ সম্পর্ক। মনিবরা তাদের মামলুকদের সাথে গোলামের মতো ব্যবহার করতেন না; বরং উস্তাদের জন্য ছাত্রের সাথে যেমন আচার ব্যবহার করা দরকার, সেভাবেই করতেন।
সময়ের সাথে সাথে মামলুকরা বিভিন্ন মুসলিম সমাজে শক্তিশালী হয়ে উঠে। মিশর ছাড়াও লেভান্ট, মেসোপটেমিয়া ও ভারতে মামলুকরা রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তি অর্জন করেছিল। কিছু ক্ষেত্রে সুলতানের পদ লাভ করে। অন্যান্য ক্ষেত্রে স্থানীয় আমির বা বে হিসেবে তারা দায়িত্ব পায়। মিশর ও সিরিয়ায় মামলুকরা সালতানাত প্রতিষ্ঠা করেছিল যা মামলুক সালতানাত (১২৫০-১৫১৭) বলে পরিচিত। আইন জালুতের যুদ্ধে মামলুক সালতানাত ইলখানাতের সেনাদের পরাজিত করে। ক্রুসেডারদের সাথে লড়াইয়ের মাধ্যমে ১২৯১ সালের মামলুকরা তাদেরকে সিরিয়া থেকে বিতাড়িত করে এবং ১৩০২ সালের মধ্যে ক্রুসেডের যুগ শেষ হয়।[৬]
ক্রয় করার পর মামলুকদের অবস্থান অন্যান্য দাসদের চেয়ে উপরে থাকত। অন্যান্য দাসদেরকে অস্ত্র বহন ও নির্দিষ্ট কিছু কাজ করার অনুমতি ছিল না। আইয়ুবীয় রাজবংশের সময় থেকে মুহাম্মদ আলি পাশার সময় পর্যন্ত মিশরে মামলুকদেরকে “প্রকৃত শাসক” হিসেবে বিবেচিত হত। স্বাধীন মুসলিমদের চেয়ে তাদের সামাজিক মর্যাদা উপরে ছিল।[৭]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]- বাহরি রাজবংশ
- বুরজি রাজবংশ
- কসাক জাতি
- সামন্ত্রতন্ত্র
- মামলুক যুগে জেরুজালেম
- মামলুক তলোয়ার
- মামলুক স্থাপত্য
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Isichei, Elizabeth (১৯৯৭)। A History of African Societies to 1870। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 192। সংগ্রহের তারিখ ৮ নভেম্বর ২০০৮।
- ↑ McGregor, Andrew James (২০০৬)। A Military History of Modern Egypt: From the Ottoman Conquest to the Ramadan War। Greenwood Publishing Group। পৃষ্ঠা 15। আইএসবিএন 9780275986018।
By the late fourteenth century Circassians from the north Caucasus region had become the majority in the Mamluk ranks.
- ↑ Relations of the Georgian Mamluks of Egypt with Their Homeland in the Last Decades of the Eighteenth Century. Daniel Crecelius and Gotcha Djaparidze. Journal of the Economic and Social History of the Orient, Vol. 45, No. 3 (2002), pp. 320—341. ISSN 0022-4995.
- ↑ গুগল বইয়ে Basra, the failed Gulf state: separatism and nationalism in southern Iraq, পৃ. 19, By Reidar Visser
- ↑ Hathaway, Jane (ফেব্রুয়ারি ১৯৯৫)। "The Military Household in Ottoman Egypt"। International Journal of Middle East Studies। 27 (1): 39–52। ডিওআই:10.1017/s0020743800061572।
- ↑ Asbridge, Thomas। "The Crusades Episode 3"। BBC। সংগ্রহের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২।
- ↑ Behrens-Abouseif, Doris. Cairo of the Mamluks: A History of Architecture and Its Culture. New York: Macmillan, 2008.
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]- Janet L. Abu-Lughod (১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১)। Before European hegemony: the world system A.D. 1250–1350। Oxford University Press US। আইএসবিএন 978-0-19-506774-3।
- A. Allouche: Mamluk Economics: A Study and Translation of Al-Maqrizi's Ighathat. Salt Lake City, 1994
- Reuven Amitai-Preiss (১৯৯৫)। Mongols and Mamluks: the Mamluk-Īlkhānid War, 1260–1281। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-46226-6। ৯ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১১।
- Matthew Gordon, "The Breaking of a Thousand Swords: A History of the Turkish Military of Samarra (200-275 Ah/815-889 Ce)", SUNY Press, 2001.
- Ulrich Haarmann: Das Herrschaftssystem der Mamluken, in: Halm / Haarmann (Hrsg.): Geschichte der arabischen Welt. C.H. Beck (2004), আইএসবিএন ৩-৪০৬-৪৭৪৮৬-১
- E. de la Vaissière, Samarcande et Samarra. Elites d'Asie centrale dans l'empire Abbasside, Peeters, 2007 Peeters-leuven.be ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৬ আগস্ট ২০১৯ তারিখে (ফরাসি)
- James Waterson, "The Mamluks" (History Today March 2006)
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- Mamluk Studies Resources from the Chicago Online Bibliography of Mamluk Studies and The Chicago Online Encyclopedia of Mamluk Studies Review at the University of Chicago
- The Mamluks at BBC's In Our Time
- Qur'an Carpet Page; al-Fatihah from a 14th-century Mamluk Qur'an at the World Digital Library