মঙ্গল পাণ্ডে: দ্য রাইজিং
মঙ্গল পাণ্ডে: দ্য রাইজিং | |
---|---|
পরিচালক | কেতন মেহতা |
প্রযোজক | ববি বেদী কেতন মেহতা দীপা সাহি |
চিত্রনাট্যকার | ফারুখ ধোন্দি |
কাহিনিকার | ফারুখ ধোন্দি |
শ্রেষ্ঠাংশে | আমির খান রাণী মুখার্জী টুবি স্টিফেন্স কোরাল বিড অমীশা প্যাটেল কিরণ খের |
বর্ণনাকারী | ওম পুরী |
সুরকার | এ আর রহমান |
চিত্রগ্রাহক | হিম্মান ধমিজা |
সম্পাদক | এ শ্রীকর প্রসাদ |
পরিবেশক | কালেইডোস্কোপ এন্টারটেইনমেন্ট টিএফকে ফিল্মস ইনক্স লেজার লিমিটেড যশ রাজ ফিল্মস |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১৫১ মিনিট |
দেশ | ভারত |
ভাষা | হিন্দি |
নির্মাণব্যয় | ₹ ৩৪ কোটি (ইউএস$ ৪.১৬ মিলিয়ন)[১] |
আয় | ₹ ৫২.৫৮ কোটি (ইউএস$ ৬.৪৩ মিলিয়ন)[২] |
মঙ্গল পাণ্ডে: দ্য রাইজিং বা দ্য রাইজিং: ব্যালাড অব মঙ্গল পাণ্ডে (হিন্দি: मंगल पांडे: द राइज़िंग) হচ্ছে ২০০৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ভারতীয় চলচ্চিত্র যেটি ১৮৫৭ সালে সংঘটিত ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানীর বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনাদের বিদ্রোহ বা সংক্ষেপে ১৮৫৭ সালের সিপাহী (সৈনিক) বিদ্রোহের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছিলো। চলচ্চিত্রটির পরিচালক ছিলেন কেতন মেহতা এবং প্রযোজনা উনি ছাড়াও তার স্ত্রী দীপা সাহি এবং ববি বেদী করেছিলেন তাদের কালেইডোস্কোপ এন্টারটেইনমেন্ট নামক প্রতিষ্ঠানটির দ্বারা।
চলচ্চিত্রটিতে মঙ্গল পাণ্ডে চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন হিন্দি চলচ্চিত্র জগতের খ্যাতিমান তারকা আমির খান, যাকে ২০০১ সালের দিল চাহতা হ্যায়-এর পর আর কোনো চলচ্চিত্রে দেখা যায়নি। ২০০৫ সালের 'কান চলচ্চিত্র উৎসব' এর 'মার্শ দু ফিল্ম' শাখায় এটি প্রদর্শিত হয়েছিলো।[৩][৪] মঙ্গল পাণ্ডেঃ দ্য রাইজিং চলচ্চিত্রটি ২০০৫ সালের চতুর্থ সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র ছিলো।[৫]
কাহিনীসংক্ষেপ
[সম্পাদনা]সিনেমার কাহিনী শুরু হয় ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে, ওম পুরী কাহিনীর বর্ণনা করতে থাকেন।
ভারত তখন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনাধীন। এই ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির নিজস্ব সেনাবাহিনী আছে যেটাতে বহু ভারতীয় পুরুষ সৈনিক পদে চাকরি করে। এমনই একজন সৈনিক হলেন মঙ্গল পাণ্ডে। এই মঙ্গল পাণ্ডে প্রথম 'ইংরেজ-আফগান যুদ্ধে' অংশগ্রহণ করেন এবং আহত হন। যুদ্ধচলাকালীন তিনি তার রেজিমেন্টের একজন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন উইলিয়াম গর্ডনকে সাক্ষাৎ মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচান এবং পরে ক্যাপ্টেন উইলিয়াম রাতে তাঁবুতে নিজে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় বাইরে মঙ্গলকে দেখতে যান সৈনিকদের জন্য মাটিতে বিছানো চাদরে যেখানে মঙ্গলও চিকিৎসাধীন ছিলেন। এই ক্যাপ্টেন এবং সৈনিক মঙ্গলের মধ্যে এক ভালো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
একদা ক্যাপ্টেন উইলিয়াম জোয়ালা নামের এক নারীকে তার মৃত স্বামীর সাথে জ্যান্ত আগুনে জালানোর সময় উঠিয়ে নিয়ে আসেন এবং এই সতীদাহ প্রথা পালনকারী মানুষদেরকে তার তলোয়ার দিয়ে ভয় দেখান এবং পরে মঙ্গলও উইলিয়ামের পক্ষে কথা বলেন। ক্যাপ্টেন উইলিয়াম গর্ডন জোয়ালার প্রেমে পড়ে যান এবং পরে তার সাথে দৈহিক মিলন করেন। অপরদিকে অন্যএকদিন হীরা নামের একটি মেয়েকে স্থানীয় বাজারে দাসী হিসেবে বিক্রি করার জন্য কিছু পুরুষ ভাষণ দিতে থাকে এবং ক্যাপ্টেন উইলিয়াম এবং তার বান্ধবী এমিলি কেন্ট এবং সৈনিক মঙ্গল পাণ্ডে ঘটনা দেখতে থাকেন। মেয়েটিকে পরে পতিতালয়ে বিক্রি করা হয় যেখানে লোল বিবি নামের এক সর্দারনী থাকেন, মঙ্গল পরে হীরার প্রেমে পড়ে যান।
ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির সেনাবাহিনীতে একটি নতুন বন্দুক আনা হয় যার নাম হচ্ছে 'এনফিল্ড'। সকল ভারতীয় সৈনিকদের মধ্যে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে এনফিল্ড বন্দুকটিতে যে কার্তুজ আছে সেটির টোটা যেটি গুলি করার আগে দাঁত দিয়ে কাটতে হয় সেটি নাকি শূকরের চর্বি এবং গরুর মাংস দিয়ে তৈরি। ভারতীয় সেনাদের মধ্যে যারা হিন্দু তারা গরু মুখে দিতে পারবেনা আবার মুসলিম সেনারা শূকর মুখে দিতে পারবেনা। এই জন্য সেনারা এক জেনারেলের কাছে অভিযোগ করেন এ ব্যাপারে কিন্তু জেনারেল তাদেরকে এই বলে আশ্বাস দেন যে ওটি শুধুই গুজব।
ক্যাপ্টেন উইলিয়াম গর্ডন একবার এক বন্দুক চালানো অনুশীলনে লক্ষ্য করেন যে সৈনিকেরা বন্দুক চালাতে অপারগ এবং ঐ মূহুর্তে একজন জেনারেল এসে দেখেন এবং জিজ্ঞেস করেন যে কি ব্যাপার, ক্যাপ্টেন উইলিয়াম তাকে সব কিছু বললে জেনারেল ক্যাপ্টেনকে বলেন যে সৈনিকদেরকে বলতে যে বন্দুকের কার্তুজ কোনো প্রাণী দ্বারা তৈরি নয় এবং বন্দুক চালাতে বলেন। তার কথা শুনে কোনো সেনা না এলেও মঙ্গল পাণ্ডে দৃপ্তচিত্তে এগিয়ে আসেন এবং কার্তুজ কামড়িয়ে বন্দুক থেকে গুলি চালান কুশপুত্তলিকায়।
মঙ্গল একবার বন্দুক বানানোর ফ্যাক্টরি দেখে নিশ্চিত হন যে আসলেই বন্দুক শূকর এবং গরু দ্বারা তৈরি। তিনি এসব দেখে মাথা গরম করেন এবং ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে মনে মনে বিক্ষুব্ধ হন।
মঙ্গল পাণ্ডে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের ডাক দেন এবং সকল ভারতীয় সেনাদের একত্রিত করেন। অনেক ব্রিটিশ সেনা এবং কর্মকর্তা মারা যান, এমনকি ক্যাপ্টেন উইলিয়ামের সঙ্গেও লড়াই এর এক পর্যায়ে তার মুখে তলোয়ার দিয়ে খোঁচা দেন মঙ্গল।
মঙ্গলকে ব্রিটিশরা গ্রেফতার করতে সমর্থ হয় এবং তার কোর্ট মার্শাল হয় যেখানে তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয়, ঐ সামরিক আদালতে ক্যাপ্টেন উইলিয়ামও উপস্থিত থাকেন এবং মঙ্গলকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন তবে ব্যর্থ হন। মঙ্গলকে ফাঁসি দিলে সাধারণ জনগণ অনেক ক্ষেপে যায় এবং বিভিন্ন ব্রিটিশ স্থাপনায় অগ্নি-সংযোগ এবং মানুষ হত্যা করে। এই সেনা বিদ্রোহের ফলস্বরূপ ব্রিটেনের রাণী ভিক্টোরিয়া ভারতের শাসন ক্ষমতা সরাসরি নিজের হাতে তুলে নেন।
অভিনয়ে
[সম্পাদনা]অভিনেতা/অভিনেত্রী | যে চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন |
---|---|
আমির খান | সিপাহী (সৈনিক) মঙ্গল পাণ্ডে |
রাণী মুখার্জী | হীরা |
টুবি স্টিফেন্স | ক্যাপ্টেন উইলিয়াম গর্ডন |
কোরাল বীড | এমিলি কেন্ট |
অমীশা প্যাটেল | জোয়ালা |
কিরণ খের | লোল বিবি |
বেন নীলন | ক্যাপ্টেন হিউসন |
হাবিব তানভীর | বাহাদুর শাহ জাফর |
মুরালি শর্মা | শেখ পল্টু |
বর্ষা উসগাওকর | রাণী লক্ষ্মীবাঈ |
কেনেথ ক্র্যানহ্যাম | কেন্ট |
টম এ্যালটার | ওয়াটসন |
মুকেশ তিওয়ারী | সুবেদার বখ্ত খান |
শাহবাজ খান | আজিমুল্লাহ |
দীপরাজ রানা | তাতিয়া টোপে |
আমিন হাজি | বীর সিংহ |
স্টিভেন রিমকাস | কর্নেল মিচেল |
সঞ্জয় স্বরাজ | সিপাহি ঈশ্বরীপ্রসাদ |
সিমন চ্যান্ডলার | লকউড |
ক্রিস্টোফার এ্যাডামসন | জেনারেল এ্যানসন |
দিশা ভাকানি | ইয়াসমিন |
রনি টমস | সার্জেন্ট (ব্যারাকপুর) |
মোনা আম্বেগাওকর | কমলা |
জেরেমি ক্লাইড | জেনারেল হার্সি |
সোফিয়া হক | 'রসিয়া' গানে মূল নাচনেওয়ালী |
কৈলাস খের | সুফি গায়ক |
মুক্তি
[সম্পাদনা]বক্স অফিস
[সম্পাদনা]মঙ্গল পাণ্ডেঃ দ্য রাইজিং 'বক্স অফিস ইন্ডিয়া' দ্বারা একটি মধ্যম ধাঁচের চলচ্চিত্র স্বীকৃতি পেয়েছিলো। ভারতে চলচ্চিত্রটি ৪৫ মিলিয়ন রুপী আয় করে এবং অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোতে সর্বমোট ৫২ মিলিয়ন রুপী আয় করে।[২][৬]
চেন্নাই বক্স অফিসে মুক্তি পাওয়ার প্রথম সপ্তাহতেই এটি প্রথম দিকে ছিলো।[৭]
সঙ্গীত
[সম্পাদনা]মঙ্গল পাণ্ডে: দ্য রাইজিং | ||||
---|---|---|---|---|
কর্তৃক সাউন্ডট্র্যাক অ্যালবাম | ||||
মুক্তির তারিখ | ১৫ জুলাই ২০০৫ (ভারত) | |||
স্টুডিও | পঞ্চতন রেকোর্ড ইন এবং এএম স্টুডিয়োস | |||
ঘরানা | চলচ্চিত্র সঙ্গীত | |||
সঙ্গীত প্রকাশনী | যশ রাজ মিউজিক | |||
প্রযোজক | ববি বেদী | |||
এ আর রহমান কালক্রম | ||||
|
জাভেদ আখতারের গীতিতে এ আর রহমান সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন।
নং. | শিরোনাম | কণ্ঠ | দৈর্ঘ্য |
---|---|---|---|
১. | "আল মাদাত মউলা" | এ আর রহমান, কৈলাস খের, মোর্তজা খান, কাদির | ৫ঃ৫৮ |
২. | "হোলি রে" | আমির খান, উদিত নারায়ণ, মধুশ্রী, শ্রীনিবাস, চিন্ময়ী শ্রীপদা | ৪ঃ৫৩ |
৩. | "ম্যাঁ ভারি ভারি" | কবিতা কৃষ্ণমূর্তি, রীনা ভরদ্বাজ | ৪ঃ৫৪ |
৪. | "মঙ্গল মঙ্গল - আত্মা" | কৈলাস খের, সুখবিন্দর সিং | ৪ঃ১৯ |
৫. | "মঙ্গল মঙ্গল - অগ্নি" | কৈলাস খের | ২ঃ৫৫ |
৬. | "মঙ্গল মঙ্গল" | কৈলাস খের | ২ঃ৩১ |
৭. | "রসিয়া" | ঋচা শর্মা, বনি চক্রবর্তী | ৫ঃ৫৭ |
৮. | "টাকে টাকে" | সুখবিন্দর সিং, কৈলাস খের, কার্তিক দাস বাউল | ৪ঃ৩৫ |
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ http://www.imdb.com/title/tt0346457/business
- ↑ ক খ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২২ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ "The Hindu : Entertainment / Cinema : Indian films a `nonentity' at Cannes" (ইংরেজি ভাষায়)। Chennai, India। ১৯ মে ২০০৫।
- ↑ "The Hindu : Entertainment Bangalore / Cinema : Cannes premier for Naina" (ইংরেজি ভাষায়)। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "Mangal Pandey - The Rising"। www.boxofficeindia.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-১৭।
- ↑ "Top Lifetime Grossers Worldwide (IND Rs)" (ইংরেজি ভাষায়)। boxofficeindia। ২১ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ Mangal Pandey opens at No.1 in Chennai[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- হিন্দি ভাষার চলচ্চিত্র
- ২০০৫-এর চলচ্চিত্র
- ২০০০-এর দশকের হিন্দি ভাষার চলচ্চিত্র
- কেতন মেহতা পরিচালিত চলচ্চিত্র
- ভারতীয় জীবনীসংক্রান্ত চলচ্চিত্র
- ভারতীয় ঐতিহাসিক চলচ্চিত্র
- ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের পটভূমিতে চলচ্চিত্র
- ১৮৫৭-এর ভারতীয় বিদ্রোহ সম্পর্কে চলচ্চিত্র
- ১৮৫০-এর দশকের পটভূমিতে চলচ্চিত্র
- ইংরেজি ভাষার ভারতীয় চলচ্চিত্র
- ব্রিটিশ রাজের পটভূমিতে চলচ্চিত্র
- যশ রাজ ফিল্মস পরিবেশিত চলচ্চিত্র
- এ আর রহমান সুরারোপিত চলচ্চিত্র
- আইটেম নাম্বার বিশিষ্ট চলচ্চিত্র
- উত্তরপ্রদেশের পটভূমিতে চলচ্চিত্র
- ভারতীয় রাজার সাংস্কৃতিক চিত্রায়ন
- উত্তরপ্রদেশে ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলন
- রাণী লক্ষ্মীবাঈয়ের সাংস্কৃতিক চিত্রায়ন
- ভারতীয় ঐতিহাসিক নাট্য চলচ্চিত্র