জাহাজ
জাহাজ এক ধরনের বৃহদাকার নৌযান যা নদী কিংবা সমুদ্রে চলাচলের উপযোগী করে যাত্রী কিংবা মালামাল পরিবহনের কাজে ব্যবহার করা হয়। আধুনিক সভ্যতার বিস্তারে জাহাজের অবদান অনস্বীকার্য। এখন পর্যন্ত জাহাজ তথা নৌপরিবহনই সবচেয়ে সস্তা পরিবহন হিসেবে বিবেচিত হয়। পূর্বের ভেলাজাতীয় ও পালতোলা নৌযান বর্তমানে পানির নীচ দিয়ে চলাচলেরও ক্ষমতাসম্পন্ন হয়েছে।
পানিতে ভাসার ব্যাখ্যা
[সম্পাদনা]তরল পদার্থে নিমজ্জিত একটি বস্তু উপরের দিকে যে বল অনুভব করে তা বস্তুটি দ্বারা অপসারিত তরলের ওজনের সমান। তাই দুই হাজার টনের একটি জাহাজ পানিতে ডুবতে থাকবে যতক্ষণ না এটি দুই হাজার টন পানিকে অপসারণ করবে। যদি জাহাজটি ডুবে যাবার আগেই দুই হাজার টন পানিকে অপসারণ করে ফেলে তাহলে জাহাজটি আর না ডুবে এবার ভেসে থাকবে। এটা সম্ভব হবে জাহাজের ঘনত্বকে জাহাজ দ্বারা অপসারিত পানির ঘনত্বের চেয়ে কম করে দিলে। জাহাজের ভেতরে ফাঁকা স্থান রেখে এটা করা হয়। ফলে জাহাজ সমান ওজনের পানিকে অপসারণ করে ফেলার পর ভেসে থাকে।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]প্রথম জলযান প্রায় ১০০০০ বছর আগে চলেছে বলে জানা যায়।
মেয়াদকাল
[সম্পাদনা]অধিকাংশ সমুদ্র চলাচলের উপযোগী মালবাহী জাহাজের গড় আয়ু ২০ থেকে ৩০ বছর। জোড়া কাঠ (প্লাইউড) কিংবা কাচতন্তু (ফাইবারগ্লাস) দিয়ে জাহাজ তৈরী করা হলে তা ত্রিশ থেকে চল্লিশ বছর পর্যন্ত চলাচলের উপযোগী থাকে। শক্ত কাঠের তৈরী জাহাজ আরো বেশি সময় ব্যবহৃত হয়ে থাকে; তবে এর জন্যে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন। সতর্কভাবে রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে ইস্পাতের পাটাতনের জাহাজ শতাধিক বছর কর্মক্ষমতা প্রদর্শন করে। নষ্ট হয়ে যাওয়া জাহাজকে জাহাজভাঙাতে (শিপব্রেকার) টুকরা টুকরা করার জন্য (স্ক্র্যাপিং) পাঠানো হয়। জাদুঘর কিংবা কৃত্রিমভাবে প্রদর্শনের জন্যেও এর পুনর্ব্যবহার হয়ে থাকে।
অনেক জাহাজই স্থলভাগে তৈরী করা হয় না। আগুন, সংঘর্ষ, ডুবে যাবার মাধ্যমে এর জীবনকাল শেষ হয়ে যায়। জাতিসংঘের তথ্য মোতাবেক জানা যায়, মহাসাগরের তলদেশে ত্রিশ লক্ষেরও অধিক জাহাজের ভগ্নাবশেষ জমা পড়ে আছে।[১]
জাহাজের প্রকারভেদ
[সম্পাদনা]যেহেতু জাহাজ নৌ স্থাপত্যের নীতি ব্যবহার করে তৈরি করা হয় যার জন্য একই কাঠামোগত উপাদানগুলির প্রয়োজন হয়, তাদের শ্রেণীবিভাগ তাদের কার্যের উপর ভিত্তি করে যেমন পলেট এবং প্রেসলেস দ্বারা প্রস্তাবিত, যার জন্য উপাদান পরিবর্তন প্রয়োজন।[২] নৌ স্থপতিদের দ্বারা সাধারণভাবে গৃহীত বিভাগ হল:[৩]
- মাছ ধরা নৌকা
- যাত্রীবাহী জাহাজ
- ডুবোজাহাজ - জলের নিচে চলাচলে সক্ষম ও স্বাধীনভাবে বিচরণকারী নৌযানবিশেষ।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]মডেল জাহাজ
তালিকা
জাহাজের আকার
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Arango, Tim (2007-09-11). "Curse of the $500 million sunken treasure". Money.cnn.tv. Retrieved 2009-09-19."। ২০০৮-০৯-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-১১-২৩।
- ↑ Paulet, Dominique; Presles, Dominique (১৯৯৯)। Architecture navale, connaissance et pratique (ফরাসি ভাষায়)। Paris: Éditions de la Villette। আইএসবিএন 978-2-903539-46-7।
- ↑ "Naval architecture"। Encyclopedia Britannica (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৯-০৪।