বিষয়বস্তুতে চলুন

উচ্চ মিয়ানমার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ব্রিটিশদের তৈরি বার্মার ভূ-রাজনৈতিক মানচিত্র। ১৮৮৫ সালে কমলা রং দ্বারা উচ্চ বার্মাকে বোঝান হয়েছে; ব্রিটিশ বার্মা (নিম্ন বার্মা) এবং অন্যান্য ব্রিটিশ অঞ্চল গোলাপী রং দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে।

উচ্চ বার্মা (বর্মী: အထက်မြန်မာပြည်, যা প্রকৃত মিয়ানমার নামেও পরিচিত) বলতে বোঝায় বার্মার (মিয়ানমার) একটি ভৌগোলিক অঞ্চল, যা ঐতিহ্যগতভাবে মান্দালয় এবং এর আশেপাশের এলাকা (আধুনিক মান্দলয়, সাগিং, ম্যাগওয়ে অঞ্চল) নিয়ে গঠিত। অনেক ক্ষেত্রে আরও বিস্তৃতভাবে বোঝাতে কাচিন এবং শান রাজ্যকে উচ্চ বার্মার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বর্মী ভাষাতে উচ্চ বার্মার মানুষজন সাধারণত আয়ন-থা (အညာသား) হিসাবে পরিচিত হয়, তবে নিম্ন বার্মার মানুষজন আউক-থ (အောက် သား) নামে পরিচিত।

এই শব্দটিকে প্রথমে মিয়ানমার (বার্মা) দেশটির কেন্দ্রীয় ও উত্তর অঞ্চলকে উল্লেখ করার জন্য ব্রিটিশদের দ্বারা প্রথম ব্যবহৃত হয়। ১৮২৫ সালের দ্বিতীয় অ্যাংলো-বার্মিজ যুদ্ধের পর নিম্ন বার্মা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল, যখন উচ্চ বার্মা ১৮৮৫ সালের তৃতীয় অ্যাংলো-বার্মিজ যুদ্ধ পর্যন্ত বার্মার রাজত্বের অধীনে স্বাধীন ছিল। উচ্চ বার্মাকে যথাযথ বার্মা ও আভা রাজ্য নামেও পরিচিত ছিল। ঐতিহাসিকভাবে উচ্চ বার্মা প্রধানত বার্মার অন্তর্গত ছিল (যখন নিন্ম বার্মা ঐতিহাসিকভাবে ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে মণিভাষী জনগণের এলাকা ছিল)। ঔপনিবেশিক প্রশাসন কর্তৃক মনোনীত ফ্রন্টিয়ার অঞ্চলগুলোতে শান রাজ্য এবং আধুনিক কাচিন রাজ্য হিসাবে জাতিগত সংখ্যালঘু এলাকাও উচ্চ বার্মা মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল।

উচ্চ ও নিন্ম বার্মার মধ্যে এই পার্থক্য কিছু সরকারী বিভাগগুলোতেও পাওয়া যায় (উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় উচ্চতর বা নিন্ম বার্মায় নিযুক্ত রয়েছে)। এছাড়া কিছু পত্রিকা দুটি এলাকার মধ্যে পার্থক্য করে। মিয়ানমার টাইমসের বর্মী ভাষার সংস্করণের একটি উদাহরণ; সংবাদপত্রটি উচ্চ বার্মার খবর জন্য একটি আলাদা বিভাগ রেখেছে।[] ভাষাগত পার্থক্যের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ বর্মাদের দ্বারা কথিত বর্মী ভাষার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে, বিশেষ করে শব্দভাণ্ডারের পছন্দ অনুযায়ী (যেমন পারিবারিক মাতৃভাষা যা একটি পরিবারের মাতৃ এবং পিতামাতাদের পার্থক্য করে, যা নিম্ন বার্মীজদের দ্বারা কথিত ভাষায় এই পার্থক্য থাকে না)। তবে, ইরাওয়াদি নদী উপত্যকা জুড়ে বার্মিজদের মধ্যে অসাধারণ অভিন্নতা রয়েছে, যার মধ্যে নিন্ম বার্মার বদ্বীপ এবং উপকূলীয় অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

মিয়ানমারের কাছে উচ্চ বার্মার গুরুত্ব অপরিসীম। এই এলাকাটি অরণ্য আচ্ছাদিত পাহাড়ি অঞ্চল। এই এলাকার উত্ত-পূর্ব দিকে চীন, পূর্ব দিকে থাইল্যান্ড, পশ্চিমে বাংলাদেশ এবং উত্তর-পশ্চিমে ভারত অবস্থিত। এই অঞ্চলটি খনিজ সম্পদে পরিপূর্ণ। উচ্চ বার্মায় দেশের রাজধানী নেপিডো ও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয় অবস্থিত।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "အထက်မြန်မာပြည်သတင်းများ ကဏ္ဍ"မြန်မာတိုင်း(မ်)। পৃষ্ঠা c। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ আগস্ট ২০১১