বিষয়বস্তুতে চলুন

ইরাক

স্থানাঙ্ক: ৩৩° উত্তর ৪৩° পূর্ব / ৩৩° উত্তর ৪৩° পূর্ব / 33; 43
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
Republic of Iraq

ইরাকের জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
নীতিবাক্য: الله أكبر   (Arabic)
"Allahu Akbar"  (transliteration)
"Allah is the Greatest"
জাতীয় সঙ্গীত: 
Mawtini
(موطني)  
"My Homeland"
ইরাকের অবস্থান
ইরাকের অবস্থান
রাজধানী
ও বৃহত্তম নগরী বা বসতি
বাগদাদ
৩৩°২০′ উত্তর ৪৪°২৩′ পূর্ব / ৩৩.৩৩৩° উত্তর ৪৪.৩৮৩° পূর্ব / 33.333; 44.383
সরকারি ভাষা
স্বীকৃত আঞ্চলিক ভাষা
  • অন্যান্য স্বীকৃত ভাষা
ধর্ম
জাতীয়তাসূচক বিশেষণইরাকি
সরকারযুক্তরাষ্ট্রীয় সংসদীয় গণতন্ত্র
আব্দুল লতিফ রশিদ
মোহাম্মদ শিয়া আল সুদানী
স্বাধীনতা যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে
৩ অক্টোবর ১৯৩২
১৪ জুলাই ১৯৫৮
১৫ অক্টোবর ২০০৫
আয়তন
• মোট
৪,৩৮,৩১৭ কিমি (১,৬৯,২৩৫ মা) (৫৯ তম)
• পানি (%)
১.১
জনসংখ্যা
• ২০১১ আনুমানিক
৩০,৩৯৯,৫৭২[] (৩৯ তম)
• ঘনত্ব
৭৩.৫/কিমি (১৯০.৪/বর্গমাইল) (১২৫ তম)
জিডিপি (পিপিপি)২০১১ আনুমানিক
• মোট
$১২৫.৬৬৫ বিলিয়ন [] (৬৩ তম)
• মাথাপিছু
$৩,৮২৬[] (১২৬ তম)
জিডিপি (মনোনীত)২০১১ আনুমানিক
• মোট
$১০৮.৪১৮ বিলিয়ন[] (৬২ তম)
• মাথাপিছু
$৩,৩০১[] (৯৭ তম)
জিনি (২০১২)২৯.৫[]
নিম্ন
মানব উন্নয়ন সূচক (২০১৮)বৃদ্ধি ০.৬৮৯[]
মধ্যম · ১২০ তম
মুদ্রাইরাকি দিনার (IQD)
সময় অঞ্চলইউটিসি+৩ (AST)
গাড়ী চালনার দিকডান
কলিং কোড+৯৬৪
ইন্টারনেট টিএলডি.iq
  1. Constitution of Iraq, Article 4 (1st).
সুলায়মানিয়াহ, কুর্দিস্তান

ইরাক (আরবি: العراق ইরাক়্ (শ্রবণ করুন) সরকারিভাবে ইরাক প্রজাতন্ত্র, একটি মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্র। বাগদাদ ইরাকের রাজধানী। ইরাকের দক্ষিণে কুয়েত এবং সৌদি আরব, পশ্চিমে জর্ডান, উত্তর-পশ্চিমে সিরিয়া, উত্তরে তুরস্ক এবং পূর্বে ইরান (কোর্দেস্তন প্রদেশ (ইরান)) অবস্থিত।

রাজনীতি

[সম্পাদনা]

ইরাকের রাজনীতি একটি ফেডারেল সংসদীয় প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের কাঠামোয় অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী হলেন সরকার প্রধান। নির্বাহী ক্ষমতা সরকারের হাতে, আর আইন প্রণয়নের ক্ষমতা সরকার ও ইরাকের জাতীয় সংসদ উভয়ের হাতে ন্যস্ত। একটি গণভোটের পর ২০০৫ সালের ১৫ই অক্টোবর দেশটির সবচেয়ে নতুন সংবিধান পাস হয়।

ইরাকের জাতীয় সংসদের আসনসংখ্যা ২৭৫। ২০০৫ সালের ডিসেম্বরে এর জন্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচিত সরকার ২০০৬-২০১০ সালের জন্য ক্ষমতায় থাকবে।

মুস্তফা আল কাদিমি ইরাকের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।[] বারহাম সালিহ দেশের রাষ্ট্রপতি[]

ইরাক বিশ্বের প্রাচীনতম সভ্যতা মেসোপটেমিয়ার জন্য সারা বিশ্বের বুকে গৌরবে মহীয়ান। টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস (দজলা ও ফোরাত) নদীদ্বয়কে কেন্দ্র করে খ্রিস্টপূর্ব ৬০০০ বছর আগে গড়ে ওঠে এ সভ্যতা। বর্তমান আরব বিশ্বের ইরান, কুয়েত, তুরস্ক, সিরিয়া, জর্ডান, কুয়েত প্রভৃতি দেশের অংশবিশেষ এর অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রাক্তন সুমেরীয়, অ্যাসেরীয়, ব্যাবিলনীয় ও ক্যালডীয় সভ্যতা বৃহত্তর মেসোপটেমীয় সভ্যতারই বিভিন্ন পর্যায়। তবে বিশ্বব্যাপী মেসোপটেমীয় সভ্যতার কারণে ইরাকের মহিমা বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় অনেকটাই ম্রিয়মাণ। কারণ একদিকে রয়েছে ইরাকের বর্তমান দুর্বল অর্থনৈতিক কাঠামো, অন্যদিকে আল কায়েদা, আইএস সহ নানা জঙ্গিবাদী ও পরাশক্তি সমর্থনপুষ্ট নানা সরকার বিদ্রোহী গেরিলাগোষ্ঠীর অভ্যুদ্যয়। নব্বইয়ের দশক থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈরিতার মাধ্যমেই মূলত দেশটির রাজনৈতিক স্থবিরতা শুরু হয়। ১৯৯০ সালে সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বাধীন ইরাক কুয়েতে আগ্রাসন চালায় এবং কুয়েতকে ইরাকের ১৯তম প্রদেশ ঘোষণা করে। ইরাকের দখলদারি থেকে কুয়েতকে মুক্ত করার লক্ষ্যে মার্কিন নেতৃত্বে বহুজাতিক বাহিনী ইরাকের বিরুদ্ধে ২রা আগস্ট ১৯৯০ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ সাল পর্যন্ত 'অপারেশন ডেজার্ট স্ট্রম' নামক অপারেশন পরিচালনা করে। এটি প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধ নামেও পরিচিত। এর প্রায় এক দশক পর ইরাকে মারাত্নক বিধ্বংসী পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ রয়েছে এ কারণ দর্শিয়ে ইরাকে সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধের অংশ হিসেবে অভিযান পরিচালনা করে মার্কিন ও ইংরেজ যৌথ বাহিনী। ইতিহাসে এ ঘটনা দ্বিতীয় উপসাগরীয় যুদ্ধ নামে পরিচিত। এছাড়া মার্কিন বাহিনী ইরাকের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে ২০০৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর 'অপারেশন রেড ডন' নামক আরেকটি অপারেশনও পরিচালনা করে। এভাবে গত কয়েক দশকে বিভিন্ন অস্থিরতা ও যুদ্ধের কারণে ইরাকের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থায় দুর্দশা নেমে আসে। সাম্প্রতিকতম সময়ে আইএসআইএল (ইসলামিক স্টেটস ইন ইরাক অ্যান্ড লেভান্তে) নামক সন্ত্রাসী সংগঠন ইরাকের ভূমিতে গঠিত হয় এবং মসুলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নগরীতে শক্তিশালী ঘাঁটি গড়ে তোলে। এছাড়া দেশটির উত্তর সীমান্তবর্তী কুর্দিস্তান প্রদেশের বিচ্ছিন্নতাবাদ সমস্যাও ইরাকের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে ইরাকের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক গতিশীলতা এবং দুর্বল সরকার ও রাষ্ট্রব্যবস্থার কারণে বিশ্ব রাজনীতিতে দেশটির গুরুত্ব ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে।

প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ

[সম্পাদনা]

ইরাক উনিশ গভর্নরেট (বা প্রদেশ) দ্বারা গঠিত হয়। ইরাকি কুর্দিস্তান (ইরাকি, দোহুক, সুলাইমানিয়া এবং হালাবজা) ইরাকের একমাত্র আইনানুযায়ী নির্ধারিত অঞ্চল, যার নিজস্ব সরকার এবং আধা সরকারি বাহিনী রয়েছে ।

উত্তর ইরাক প্রদেশ

[সম্পাদনা]

নিনাওয়া প্রদেশ

পশ্চিম ইরাক প্রদেশ

[সম্পাদনা]

আল আনবার প্রদেশ(সবথেকে বৃহত্তম প্রদেশ)

মধ্য ইরাক প্রদেশ

[সম্পাদনা]

বাগদাদ প্রদেশ(সবথেকে জনবহুল প্রদেশ)

দক্ষিণ ইরাক প্রদেশ

[সম্পাদনা]
  1. আল মুসান্না প্রদেশ
  2. বাসরাহ প্রদেশ

ভূগোল

[সম্পাদনা]

ইরাক মূলত মরুময় দেশ, কিন্তু দজলা ও ফোরাতের মধ্যবর্তী অববাহিকার ভূমি উর্বর। নদীগুলি প্রতিবছর প্রায় ৬ কোটি ঘনমিটার পলি বদ্বীপে বয়ে নিয়ে আসে। দেশটির উত্তরাঞ্চল পর্বতময়। সর্বোচ্চ পর্বতের নাম চিকাহ দার, যার উচ্চতা ৩,৬১১ মিটার। পারস্য উপসাগরে ইরাকের ক্ষুদ্র একটি তটরেখা আছে। সমুদ্র উপকূলের কাছের অঞ্চলগুলি জলাভূমি ছিল, তবে ১৯৯০-এর দশকে এগুলির পানি নিষ্কাশন করা হয়।

ইরাকের জলবায়ু মূলত ঊষর। শীতকাল শুষ্ক ও ঠাণ্ডা; গ্রীষ্মকাল শুষ্ক, গরম, ও মেঘহীন। উত্তরের পার্বত্য অঞ্চলে শীতকালে ভারী বরফ পড়ে এবং এতে মাঝে মাঝে বন্যার সৃষ্টি হয়।

অর্থনীতি

[সম্পাদনা]

যুদ্ধবিদ্ধস্ত ইরাকে পর্যটন শিল্প স্থবির হয়ে পড়লেও এতে পর্যটকদের জন্য অনেক আকর্ষণীয় স্থান আছে। সামারা শহর একটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে গণ্য। এখানে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলিতে প্রায় ৭০০০ বছরের পুরনো সংস্কৃতির সন্ধান পাওয়া গেছে। মূলত মৃৎশিল্পের নিদর্শনই বেশি। আব্বাসিদ খলিফারা ৮ম শতকে বাগদাদ থেকে রাজধানী সামারায় সরিয়ে নেন, এবং এর ফলে এখানে অনেক নতুন স্থাপত্যের সৃষ্টি হয়। এদের মধ্যে অন্যতম হল সামারার বিখ্যাত সর্পিলাকার মসজিদ মিনার। ইরাকে মার্কিন-অবস্থান বিরোধীরা সম্প্রতি ২০০৭ সালে মিনারটিতে বোমা হামলা চালিয়ে ক্ষতিসাধন করেছে। শহরটিতে দুইজন শিয়া ইমামের মসজিদও আছে এবং সেগুলি শিয়া মুসলিমদের তীর্থস্থান।

বাগদাদের প্রায় ১৮০ মাইল উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত আল-হাদ্‌র শহরটিতে খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতকের প্রাচীন আসিরীয় সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া যায়। পরবর্তীতে এটিকে কেন্দ্র করেই সম্ভবত প্রথম আরব রাজ্য গড়ে উঠে। এটিও ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান।

দজলার পশ্চিম তীরে অবস্থিত আরেকটি শহর আসুর ছিল আসিরীয় সাম্রাজ্যের এককালের রাজধানী। এখানকার মন্দিরগুলির ধ্বংসাবশেষ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এই স্থানটিতে প্রায় ৫ হাজার বছর আগেও, সম্ভবত সুমেরীয় সভ্যতার শেষ দিকে, মনুষ্য বসতি ছিল। এটিও ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান। তবে ইরাক যুদ্ধের কারণে এর অবস্থা বিপন্ন।

জনমিতি

[সম্পাদনা]

আরবি ইরাকের সরকারি ভাষা। ইরাকের তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি জনগণের মাতৃভাষা আরবি। ইরাকে প্রচলিত আরবি ভাষার লিখিত রূপটি ধ্রুপদী বা চিরায়ত আরবি ভাষার একটি পরিবর্তিত রূপ। কিন্তু কথা বলার সময় ইরাকের লোকেরা আরবির বিভিন্ন কথ্য উপভাষা ব্যবহার করেন। এদের মধ্যে মেসোপটেমীয় বা ইরাকি আরবিউপভাষাটিতে ১ কোটিরও বেশি লোক কথা বলেন।

সেমিটীয় আরবি ভাষার বাইরে ইরাকে বিভিন্ন ইরানীয় ভাষা প্রচলিত। এদের মধ্যে কুর্দি ভাষা সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। ইরাকের জনগণের প্রায় ২০% কুর্দি ভাষায় কথা বলেন।

এছাড়াও ইরাকের বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ে নব্য আরামীয় ভাষা, আলতায়ীয় ভাষা (যেমন- আজারবাইজানি, তুর্কমেন, ইত্যাদি), আর্মেনীয় ভাষা, জিপসি ভাষা, ইত্যাদি প্রচলিত।

ইরাকের ধর্মসমূহ[]
ইসলাম
  
৯৫.৩%
রহস্যবাদ/ইয়াজদানবাদ
  
৩.৪%
খ্রিষ্টধর্ম
  
১.২১%
অন্যান্য
  
০.০৯%

ইরাকের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। দেশটির ৯৫–৯৯% লোক মুসলিম[][১০] ইরাকের জনসংখ্যার ধর্মীয় অন্তর্ভুক্তি সংক্রান্ত উপাত্ত অনিশ্চিত। সিআইএ বিশ্ব ফ্যাক্টবুকের ২০১৫ সালের একটি রিপোর্ট অনুসারে ইরাকের ৬৪–৬৯% শিয়া মুসলিম এবং ২৯–৩৪% সুন্নি মুসলিম[] পিউ রিসার্চের ২০১১ সালের একটি জরিপমতে ইরাকি মুসলিমদের ৫১% শিয়া এবং ৪২% সুন্নি হিসেবে নিজেদের চিহ্নিত করে।[১০]

ইরাকের মুসলিম সম্প্রদায়[]

  শিয়া (৬৯%)
  সুন্নি (২৯%)

এছাড়া ইরাকের জনসংখ্যার ১.২১% খ্রিস্টান, <০.১% ইয়াজিদি, <০.১% সাবীয় মান্দীয়, <০.১% বাহাই, <০.১% জরথুস্ত্র, <০.১% হিন্দু, <০.১% বৌদ্ধ, <০.১% ইহুদি, <০.১% লোকধর্মাবলম্বী, <০.১% অধার্মিক এবং <০.১% অন্যান্য। দেশটিতে শিয়া ও সুন্নিমিশ্রিত জনগোষ্ঠীও রয়েছে। দ্য সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুকের অনুমানমতে, ইরাকের মুসলমানদের ৬৫% শিয়া এবং ৩৫% সুন্নি।[১১] পিউ রিসার্চ সেন্টারের ২০১১ সালের একটি জরিপমতে ইরাকের মুসলমানদের ৫১% শিয়া, ৪২% সুন্নি এবং ৫% নিজেদের স্রেফ “মুসলিম” হিসেবে পরিচয় দেন।[১২] ৩৬ মিলিয়ন জনসংখ্যার ইরাকে সুন্নিদের সংখ্যা ১২–১৩ মিলিয়ন, আরব, তুর্কমেন ও কুর্দিরা এর অন্তর্ভুক্ত।

নাজাফ শহরে ইমাম আলী মসজিদ
বারতেল্লার নিকট মার মাত্তাই মঠ

ইরাকের সুন্নি সম্প্রদায় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বৈষম্যের সম্মুখীন হন বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নূরী আল-মালিকি এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।[১৩]

ইরাকে খ্রিষ্টধর্মের উৎস ৫ম শতাব্দীতে পূর্বদেশীয় মণ্ডলীর ধারণার সঙ্গে সম্পর্কিত যা উক্ত অঞ্চলে ইসলামের আগমনের পূর্ব থেকেই অস্তিত্ববান ছিল। ইরাকি খ্রিষ্টানদের অধিকাংশই স্থানীয় আসিরীয় এবং পূর্বদেশীয় প্রাচীন মণ্ডলী, পূর্ব আসিরীয় মণ্ডলী, ক্যালডীয় ক্যাথলিক মণ্ডলী, সিরীয় ক্যাথলিক মণ্ডলী ও সিরীয় অর্থডক্স মণ্ডলীর অন্তর্ভুক্ত। ইরাকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আর্মেনীয় খ্রিষ্টানদের বসবাস রয়েছে যারা আর্মেনীয় গণহত্যার সময় তুরস্ক থেকে পালিয়ে এসেছিল। ১৯৮৭ সালে ইরাকে খ্রিস্টানদের সংখ্যা ছিল ১.৪ মিলিয়নেরও বেশি যা ছিল তৎকালীন ১৬.৩ মিলিয়ন জনসংখ্যার ৮%। ১৯৪৭ সালে খ্রিস্টানসংখ্যা ৫৫০,০০০ তে গিয়ে দাঁড়ায় যা ছিল মোট ৪.৬ মিলিয়ন জনসংখ্যার ১২%।[১৪]

এছাড়াও ইরাকে মান্দানবাদী, শাবাক, ইয়ারসান, ইয়াজিদি প্রভৃতি ক্ষুদ্র ধর্মীয়-নৃগোষ্ঠী রয়েছে। ২০০৩ সালের পূর্বে এদের মোট সংখ্যা ছিল ২ মিলিয়ন। এর মধ্যে ইয়ারসান ধর্মাবলম্বীরা ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ, যা একটি প্রাক-ইসলামি ও প্রাক-খ্রিষ্টীয় ধর্ম। সাম্প্রতিককালে এক লাখের বেশি মানুষ জরথ্রুস্তবাদে ধর্মান্তরিত হওয়ার বিবরণ পাওয়া যায়। ইরাকি ইহুদি সম্প্রদায়, ১৯৪১ সালের যাদের সংখ্যা ছিল ১৫০,০০০, প্রায় পুরোপুরিভাবে দেশত্যাগ করেছে।[১৫]

ইরাকে শিয়া মুসলমানদের গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থানসমূহ, যেমন: ইমাম আলী মসজিদ, ইমাম হোসেনের মাজার, আল-কাজিমিয়া মসজিদ, আল-আসকারী মসজিদ, মসজিদ আল-কুফা ইত্যাদি অবস্থিত।[১৬]

সংস্কৃতি

[সম্পাদনা]

ইরাকের রয়েছে সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। ইরাকেই গড়ে উঠেছিলো মেসোপটেমিয়া নামক বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন সভ্যতা; যা বিশ্ব সভ্যতার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। ইরাক ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির ধারক। দেশটি তার কবি-সাহিত্যিক, চিত্রশিল্পী ও স্থাপত্যশিল্পীদের জন্য আরব বিশ্বের মধ্যে অন্যতম মর্যাদার অধিকারী, যাদের অনেকেই ছিল জগত-খ্যাত। হস্তশিল্প, কার্পেট ইত্যাদি উৎপাদনে ইরাকের খ্যাতি রয়েছে বিশ্বব্যাপী।

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. https://www.state.gov/reports/2020-report-on-international-religious-freedom/iraq/
  2. "CIA - The World Factbook"। Cia.gov। ২০১৮-১২-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১২-০২ 
  3. "Iraq"। International Monetary Fund। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৪-২১ 
  4. "World Bank GINI index"। Data.worldbank.org। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০১৬ 
  5. "2018 Human Development Report" (পিডিএফ)। United Nations Development Programme। ২০১৫। পৃষ্ঠা 9। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  6. Davison, John; Rasheed, Ahmed (২০২১-১১-০৭)। "Iraqi PM safe after drone attack on residence, military says"Reuters (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-০৮ 
  7. "Iraq names its third prime minister in 10 weeks"Reuters (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৪-০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-০৮ 
  8. "Religions in Iraq"www.gulf2000.columbia.edu 
  9. "CIA World Fact Book"। ২০২১-০৪-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-২৫ 
  10. Michael Lipka (২০১৪-০৬-১৮)। "The Sunni-Shia divide: Where they live, what they believe and how they view each other"। Pew Research Center। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৫ 
  11. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; cia নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  12. "Iraq's unique place in the Sunni-Shia divide – Pew Research Center"Pew Research Center। ১৮ জুন ২০১৪। 
  13. "Shias dominate Sunnis in the new Iraq"। CBC news World। সংগ্রহের তারিখ ১০ এপ্রিল ২০১৪ 
  14. "IRAQ: Christians live in fear of death squads"IRIN Middle East। IRIN। ১৯ অক্টোবর ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ২১ অক্টোবর ২০১৩ 
  15. Stone, Andrea (২৭ জুলাই ২০০৩)। "Embattled Jewish community down to last survivors"। Usatoday.com। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০১১ 
  16. On Point: The United States Army In Operation Iraqi Freedom – Page 265, Gregory Fontenot – 2004

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]

সরকারি

সাধারণ তথ্য

দেহ এবং জনগণ কোম্পানি

অন্যান্য