আনুন্নাকি
আনুন্নাকি (আনুনাকি, আন্নুনাকি, আনুন্না, আনানাকি ইত্যাদি বানানেও লিপ্যন্তরিত) হল প্রাচীন সুমেরীয়, আক্কাদীয়, আসিরীয় ও ব্যাবিলনীয় পুরাণে উল্লিখিত একটি দেবমণ্ডলী।[১] আনুন্নাকির সংখ্যা কত ছিল এবং তাঁরা কী ভূমিকা পালন করতেন, সেই বিবরণ সঙ্গতিবিহীন এবং প্রায়শই পরস্পর-বিরোধী। আক্কাদীয়-উত্তর যুগে রচিত প্রাচীনতম সুমেরীয় সাহিত্যকর্মে উল্লিখিত তথ্য অনুযায়ী, আনুন্নাকি ছিলেন দেবমণ্ডলীর সর্বাপেক্ষা অধিক শক্তিশালী দেবদেবী, আন ও কি-র সন্তান, স্বর্গের দেবতা ও পৃথিবীর দেবী এবং তাঁদের প্রাথমিক দায়িত্ব ছিল সুমেরীয়দের নিয়তি নির্ধারণ করা।
ইনান্নার প্রেতলোকে অবতরণ উপাখ্যানে আনুন্নাকিকে প্রেতলোকে এরেশকিগালের সিংহাসনের সম্মুখে উপবিষ্ট সাত বিচারক রূপে চিত্রিত করা হয়েছে। গিলগামেশের মহাকাব্য-সহ পরবর্তীকালের আক্কাদীয় গ্রন্থাবলিতেও এই বিবরণ অক্ষুণ্ণ থেকেছে। পুরনো ব্যাবিলনীয় যুগে মনে করা হত আনুন্নাকি হলেন প্রেতলোকের থোনিক দেবদেবী। সেই যুগে স্বর্গের দেবদেবীগণ পরিচিত ছিলেন ইগিগি নামে। প্রাচীন হিট্টাইটরা মনে করত, আনুন্নাকি হলেন দেবতাদের সবচেয়ে আদিতম প্রজন্ম। তরুণতর দেবতারা তাঁদের পরাজিত করে প্রেতলোকে নির্বাসিত করেছিলেন। এরিক ফন দানিকেন ও জেকারিয়া সিৎচিন প্রমুখের লেখা গ্রন্থাবলির মতো আধুনিক ছদ্মপ্রত্নতাত্ত্বিক রচনায় আনুন্নাকি বিশেষ স্থান করে রয়েছেন।
নাম-ব্যুৎপত্তি
[সম্পাদনা]আনুন্নাকি নামটি এসেছে সুমেরীয় আকাশ-দেবতা[২] আনের নাম থেকে।[২] নামটি ভিন্ন ভিন্ন ভাবে লেখা হয় "দআ-নুনা", "দআ-নিনা-কে৪-নে", বা "দআ-নুন-না", যার অর্থ "রাজপুত্রতুল্য সন্তান" বা "আনের সন্তান"।[১]
আনুন্নাকিকে আন ও তাঁর পত্নী ভূদেবী কি-র সন্তান মনে করা হত।[১] স্যামুয়েল নোয়া ক্রেমার কি-কে সুমেরীয় মাতৃকাদেবী নিনহুরসাগের অভিন্ন বলে চিহ্নিত করে বলেছেন যে, আদিতে দু’জনে একই দেবী ছিলেন।[৩][৪] আনুন্নাকির মধ্যে সবার বড়ো ছিলেন বায়ুদেবতা এনলিল। [৫] তিনি ছিলেন সুমেরীয় দেবমণ্ডলীর প্রধান দেবতা।[৬] সুমেরীয়রা বিশ্বাস করত, এনলিলের জন্মের আগে পর্যন্ত স্বর্গ ও পৃথিবী অবিভেদ্য ছিলেন।[৭] তারপর এনলিল স্বর্গ ও পৃথিবীকে দ্বিধাবিভক্ত করেন।[৭] এনলিল পৃথিবীকে নিয়ে যান[৮] এবং তাঁর বাবা আন নিয়ে যান আকাশকে।[৮]
পূজা ও মূর্তিতত্ত্ব
[সম্পাদনা]আনুন্নাকি দেবমণ্ডলী প্রধানত সাহিত্যকর্মেই উল্লিখিত হয়েছে।[৯] তাঁদের কোনও কাল্ট ছিল কিনা তার খুব অল্প প্রমাণই খননকার্যের ফলে আবিষ্কৃত হয়েছে।[৯][১০] এর কারণ সম্ভবত আনুন্নাকি মণ্ডলীর প্রত্যেক সদস্যের নিজস্ব কাল্ট বিদ্যমান ছিল, যা ছিল একে অপরের কাল্টের থেকে পৃথক ধরনের।[১১] একইভাবে গোষ্ঠী হিসেবে আনুন্নাকির কোনও উপস্থাপনাই এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি।[১১] তবে এই গোষ্ঠীর প্রত্যেক সদস্যের কয়েকটি বিবরণ পাওয়া গিয়েছে।[১১] প্রাচীন মেসোপটেমিয়ার দেবদেবীরা প্রায় স্বতন্ত্রভাবেই নরত্বারোপিত।[১২] মনে করা হত, তাঁরা অসাধারণ ক্ষমতার অধিকারী[১২] এবং প্রায়শ ক্ষেত্রেই সুবিশাল আকৃতিবিশিষ্ট সত্ত্বা।[১২] দেবতাদের পরনে থাকত সাধারণত মেলাম নামে এক ধরনের অস্পষ্ট বস্তু, যা "তাঁদের ভীতিপ্রদ অসাধারণত্বে আচ্ছাদিত করে রাখত"।[১৩] যোদ্ধা, রাজা, দৈত্য এমনকি দানবেরাও মেলাম পরিধান করত।[১৪] দেবতার মেলাম মানবদেহে দেখার প্রভাবকে বলা হত নি, যা ছিল মাংসে ঝিনঝিন করার প্রতিশব্দ।[১৫] দেবতাদের প্রায় সবাইকেই শিংওয়ালা টুপি-পরিহিত বলে বর্ণনা করা হত।[১৬][১৭] এই টুপিতে একটির উপর একটি স্থাপিত মোট সাতটি পর্যন্ত ষাঁড়ের শিং দেখা যায়।[১৮] কোনও কোনও ক্ষেত্রে দেবতাদের বর্ণনা করা হয়েছে সূক্ষ্ম শোভাবর্ধক সোনা ও রুপোর গয়না-খচিত বস্ত্র-পরিহিত অবস্থাতেও।[১৭]
প্রাচীন মেসোপটেমীয়রা বিশ্বাস করত যে, তাদের দেবদেবীরা স্বর্গে বাস করেন।[১৯] কিন্তু দেবতার বিগ্রহকে তারা দেবতার মূর্ত প্রকাশ জ্ঞান করত।[১৯][২০] প্রকৃতপক্ষে কাল্ট মূর্তিগুলিকে নিরন্তর যত্ন নেওয়া হত এবং সেগুলির প্রতি মনোযোগ দেওয়া হত।[১৯][২১] সেগুলির পরিচর্যার জন্য পুরোহিত গোষ্ঠীও নিযুক্ত থাকত।[২২] এই পুরোহিতেরা মূর্তিগুলিকে বেশভূষা পরাতেন[২০] মূর্তির সামনে ভোজ্যসামগ্রী নিবেদন করতেন যাতে দেবতারা "খেতে" পারেন।[১৯][২১] কোনও দেবতার মন্দিরকে মনে করা হত আক্ষরিক অর্থেই সেই দেবতার বাসভবন।[২৩] দেবতাদের নিজস্ব জলযান ছিল। এই পূর্ণদৈর্ঘ্যের বজরাগুলি সাধারণত মন্দিরের ভিতরেই রক্ষিত হত[২৪] এবং বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবে কাল্ট মূর্তিগুলিকে জলপথে পরিবহনের কাজ করত।[২৪] দেবতাদের নিজস্ব রথও ছিল, যেগুলি স্থলপথে কাল্ট মূর্তিগুলির পরিবহনে কাজে লাগত।[২৫] কখনও কখনও দেবতার কাল্ট মূর্তি যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ে যাওয়া হত, যাতে দেবতা যুদ্ধের আরম্ভটি দেখতে পান।[২৫] মনে করা হত, আনুন্নাকি সহ মেসোপটেমীয় দেবমণ্ডলীর প্রধান দেবদেবীরা "দেবসভা"য় অংশগ্রহণ করেন।[১৬] এবং এই সভার মাধ্যমেই দেবতারা তাঁদের সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।[১৬] এই সভাকে উরের তৃতীয় রাজবংশের সমসাময়িক কালে (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ২১১২ অব্দ-আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ২০০৪ অব্দ) বিদ্যমান আধা-গণতান্ত্রিক আইনপরিষদীয় ব্যবস্থার এক দিব্য প্রতিরূপ মনে করা হত।[১৬]
পুরাণ
[সম্পাদনা]সুমেরীয়
[সম্পাদনা]আনুন্নাকি শব্দটির সর্বপ্রথম জ্ঞাত উল্লেখটি পাওয়া যায় গুদিয়ার রাজত্বকালে (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ২১৪৪-২১২৪ অব্দ) এবং উরের তৃতীয় রাজবংশের সমসাময়িক কালে লিখিত শিলালিপিগুলি থেকে।[৯][১১] আদিতম গ্রন্থগুলিতে এই শব্দটি সুমেরীয় দেবমণ্ডলীর সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ দেবদেবীদের অর্থাৎ আকাশ-দেবতা আনের সন্তানসন্ততিদের বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে।[৯][২৬] "ভাগ্যনিয়ন্ত্রক সাত দেবদেবী" সম্ভবত এই দেবমণ্ডলীরই অন্তর্গত ছিলেন:[২৭] আন, এনলিল, এনকি, নিনহুরসাগ, নন্না, উতু ও ইনান্না।[২৮]
নির্দিষ্ট কয়েকজন দেবদেবীকে আনুন্নাকির সদস্য হিসেবে বর্ণনা করা হলেও, এই দেবমণ্ডলীর সকল নামের সম্পূর্ণ তালিকা আর পাওয়া যায় না।[১১] সাহিত্যকর্মে তাঁদের উল্লেখ করা হয় শুধুমাত্র এক আসঞ্জনশীল গোষ্ঠী হিসেবে।[৯][১১] এছাড়াও সুমেরীয় গ্রন্থাবলিতে আনুন্নাকির বর্ণনায় বহু অসঙ্গতি দেখা যায়।[১১] এই সকল বিবরণে আনুন্নাকির সদস্যসংখ্যা বা তাঁদের দৈব কার্যকলাপের বিষয়ে কোনও সহমত পোষণ করা হয় না।[৯][১১] প্রথম দিকে আনুন্নাকির সদস্যদের অপরিমেয় ক্ষমতার অধিকারী স্বর্গীয় দেবতা মনে করা হত।[১১] এনকি ও বৈশ্বিক শৃঙ্খলা কবিতায় দেখা যায়, আনুন্নাকির সদস্যেরা এনকির প্রতি "শ্রদ্ধা নিবেদন" করছেন, তাঁর সম্মানে স্তবগান করছেন এবং সুমেরের জনসাধারণের মধ্যে "তাঁদের বাসস্থান পরিব্যাপ্ত" করছেন।[৯][২৯] এই কবিতায় দু’বার আনুন্নাকির সদস্যদের "মানবজাতির নিয়তির নির্ধারক" বলে বর্ণনা করা হয়েছে।[৯]
প্রকৃত প্রস্তাবে সুমেরীয় দেবমণ্ডলীর প্রত্যেক প্রধান দেবতাকেই নির্দিষ্ট একটি শহরের পৃষ্ঠপোষক মনে করা হত[৩০] এবং আশা করা হত যে, তিনি সেই শহরের স্বার্থ রক্ষা করবেন।[৩০] মনে করা হত, দেবতা স্থায়ীভাবে সেই শহরের মন্দিরে বাস করেন।[৩১] একটি গ্রন্থে এরিডু শহরে অন্ততপক্ষে পঞ্চাশ জন আনুন্নাকি সদস্যের উল্লেখ পাওয়া যায়।[১][৩২] ইনান্নার প্রেতলোকে অবতরণ উপাখ্যানে দেখা যায়, আনুন্নাকির সদস্যসংখ্যা মাত্র সাত। তাঁরা বাস করেন প্রেতলোকে এবং সেখানে বিচারকের কাজ করেন।[৯][৩৩] প্রেতলোক অধিকার করতে গিয়ে ইনান্না তাঁদের বিচারসভার সম্মুখীন হন।[৯][৩৩] তাঁরা ইনান্নাকে আত্মাভিমানের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত এবং মৃত্যুদণ্ড দান করেন।[৩৩]
সুমেরীয় পুরাণের প্রধান দেবদেবীদের যুক্ত করা হত নির্দিষ্ট মহাজাগতিক বস্তুর সঙ্গে।[৩৪] ইনান্নাকে শুক্র গ্রহ মনে করা হত।[৩৫][৩৬] উতুকে মনে করা হত সূর্য।[৩৬][৩৭] নন্না ছিলেন চাঁদ।[৩৬][৩৮] আনকে খ-বিষুবীয় আকাশের, এনলিলকে উত্তর আকাশের এবং এনকিকে দক্ষিণ আকাশের সকল তারার সঙ্গে যুক্ত করা হত।[৩৯] গাগণিক অক্ষপথে এনলিলের পথটি ছিল মহাজাগতিক উত্তর মেরুর চারিধারে একটি অবিচ্ছিন্ন ও সামঞ্জস্যপূর্ণ বৃত্তের আকারবিশিষ্ট।[৪০] কিন্তু মনে করা হত যে, আন ও এনকির পথ দু’টি বিভিন্ন বিন্দুতে পরস্পরকে ছেদ করেছে।[৪১]
আক্কাদীয়, ব্যাবিলনীয় ও আসিরীয়
[সম্পাদনা]শ্রদ্ধাপ্রদর্শনে অনুগ্রহ পাওয়া যায়, বলিদানে আয়ু দীর্ঘ হয় এবং প্রার্থনায় অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত ঘটে। যিনি দেবতাদের ভয় করেন তিনি অসম্মানিত হন না। [...] যিনি আনুন্নাকি [সদস্যদের] ভয় করেন তিনি [নিজ আয়ু] দীর্ঘায়িত করেন।
— ব্যাবিলনীয় স্তোত্র[৪২]
খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দের আক্কাদীয় গ্রন্থাবলিতেও আনুন্নাকির অনুরূপ চিত্র পাওয়া যায়। ইনান্নার প্রেতলোকে অবতরণ আখ্যানে তাঁদের থোনিক পাতাল দেবতা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় সহস্রাব্দের গোড়ার দিকে রচিত এই কাহিনির একটি সংক্ষিপ্ত আক্কাদীয় পাঠে দেখা যায়, প্রেতলোকের রানি এরেশকিগাল মন্তব্য করছেন যে, তিনি "আনুন্নাকি [সদস্যদের] সঙ্গে জল পান করেন"।[৪৩] এই কবিতারই পরবর্তী অংশে এরেশকিগাল তাঁর ভৃত্য নামতারকে আদেশ করছেন "প্রবাল দিয়ে দ্বারপ্রান্তের সিঁড়ি সজ্জিত করার জন্য",[৪৪] এগালগিনা থেকে আনুন্নাকি সদস্যদের নিয়ে আসার জন্য[৪৪] এবং "তাঁদের স্বর্ণসিংহাসনে বসানোর জন্য"।[৪৪]
পুরনো ব্যাবিলনীয় যুগে (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৮৩০ অব্দ – আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৫৩১ অব্দ) ইগিগি নামে পরিচিত এক নতুন দেবগোষ্ঠীর কথা প্রচারিত হয়।[৪৫] আনুন্নাকি ও ইগিগির মধ্যে সম্পর্কটি অস্পষ্ট।[১১] কোনও কোনও ক্ষেত্রে দুই শ্রেণিকে সমার্থক অর্থে উল্লেখ করা হয়েছে।[৯][১১] আবার এর্রার কবিতা-র মতো কোনও কোনও রচনায় দুইয়ের মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য প্রদর্শিত হয়েছে।[৯][১১] পরবর্তী আক্কাদীয় আতরা-হাসিস মহাকাব্যে বলা হয়েছে, ইগিগি হলেন দেবতাদের ষষ্ঠ প্রজন্ম। তাঁদের বাধ্য করা হয়েছিল আনুন্নাকির জন্য শ্রম দান করতে।[৪৬][৪৭] চল্লিশ দিন পর ইগিগি দেবমণ্ডলী বিদ্রোহ ঘোষণা করলে আনুন্নাকি মণ্ডলীর অন্যতম সদস্য এনকি তাঁদের পরিবর্তে শ্রম দানের জন্য মানুষ সৃষ্টি করেন।[৪৬][৪৭]
মধ্য ব্যাবিলনীয় যুগের (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৫৯২ – ১১৫৫ অব্দ) পর থেকে আনুন্নাকি নামটি সাধারণত প্রেতলোকের দেবদেবী বোঝাতে[১] এবং ইগিগি নামটি স্বর্গীয় দেবদেবী বোঝাতে[১] ব্যবহৃত হত। এই যুগেই প্রাচীন ব্যাবিলনের জাতীয় দেবতা মারদুকের [১] পাশাপাশি প্রেতলোকের তিন দেবতা দামকিনা, নেরগাল ও মদানুর নাম আনুন্নাকি দেবমণ্ডলীর সর্বাপেক্ষা শক্তিধর দেবতাদের তালিকাভুক্ত হয়।[১]
প্রামাণ্য আক্কাদীয় গিলগামেশ মহাকাব্য-এ (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১২০০ অব্দ), মহাপ্লাবনের অমর উত্তরজীবী উতনাপিশতিম আনুন্নাকি দেবমণ্ডলীকে প্রেতলোকের সাত বিচারক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এই গ্রন্থ থেকে জানা যায়, ঝড় উঠলে আনুন্নাকি দেবগণ স্থলভাগে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন।[৪৮] পরে বন্যা এলে ইশতার (ইনান্নার পূর্ব সেমিটিক প্রতিরূপ) ও আনুন্নাকি সদস্যগণ মানবজাতির ধ্বংসসাধনের জন্য বিলাপ করেছিলেন।[৯][৪৯]
ব্যাবিলনীয় এনুমা এলিশ মহাকাব্যে দেখা যায়, মারদুক আনুন্নাকি সদস্যদের নিজ নিজ দায়িত্বে নিযুক্ত করছেন।[৫০] এই মহাকাব্যের একটি পরবর্তী ব্যাবিলনীয় পাঠে প্রেতলোকের ৬০০ জন[১] এবং স্বর্গের ৩০০ জন[১] আনুন্নাকি সদস্যের কথা উল্লিখিত হয়েছে, যা এক জটিল প্রেতলোক বিশ্বতত্ত্বের ইঙ্গিতবাহী।[১] কৃতজ্ঞতা স্বরূপ, "মহান দেবতা" আনুন্নাকি সদস্যবৃন্দ মারদুক, এয়া ও এললিলের প্রতি উৎসর্গিত এসাগিলা অর্থাৎ "অনিন্দ্যসুন্দর" মন্দির নির্মাণ করে দেন।[৫১] খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম শতাব্দীতে রচিত এররার কবিতা-এ আনুন্নাকি সদস্যদের দেবতা নেরগালের ভ্রাতৃবৃন্দ হিসেবে[৯] এবং মানবজাতির প্রতি প্রতিকূল মনোভাবাপন্ন বলে বর্ণনা করা হয়েছে।[৯] নব্য-আসিরীয় সাম্রাজ্যের (খ্রিস্টপূর্ব ৯১১-৬১২ অব্দ) বিশ্রীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া একটি গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে, মারদুক তাঁর আনুন্নাকি বাহিনী নিয়ে পবিত্র নিপ্পুর শহরে প্রবেশ করেন এবং সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন।[৫২] এই বিশৃঙ্খলার ফলে বন্যা আসে[৫২] এবং সেই বন্যার ফলে নিপ্পুরের আবাসিক দেবতা বাধ্য হন নিনুর্তার এশুমেশা মন্দিরে আশ্রয় নিতে।[৫২] মারদুকের সীমালঙ্ঘনে এনলিল ক্রুদ্ধ হন এবং এশুমেশার দেবতাদের আদেশ দেন মারদুক ও অন্যান্য আনুন্নাকি সদস্যদের বন্দী করতে।[৫২] আনুন্নাকি সদস্যেরা বন্দী হন।[৫২] কিন্তু মারদুক তাঁর শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা মুশ্তেশির্হাবলিমকে এশুমেশার দেবতাদের বিরুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নিযুক্ত করেন[৫৩] এবং নিজের দূত নেরেতাগমিলকে পাঠান সাক্ষরতার দেবতা নাবুকে সতর্ক করার জন্য।[৫৩] এশুমেশার দেবতারা নাবুকে কথা বলতে শুনে তাঁর খোঁজে নিজেদের মন্দির থেকে বেরিয়ে আসেন।[৫৪] মারদুক এশুমেশার দেবতাদের পরাজিত করেন এবং তাঁদের মধ্যে ৩৬০ জনকে যুদ্ধবন্দী করেন। এনলিল নিজেও বন্দী হন।[৫৪] এনলিল প্রতিবাদ করে বলেন যে, এশুমেশার দেবতারা নির্দোষ।[৫৪] তাই মারদুক তাঁদের আনুন্নাকি সদস্যদের সামনে বিচারসভায় আনয়ন করেন।[৫৪] গ্রন্থটি শেষ হয়েছে দামকিয়ান্নার (নিনহুরসাগের অপর নাম) একটি সতর্কবার্তা দিয়ে: তিনি দেবতা ও মানবজাতির কাছে অনুরোধ জানান যে, আনুন্নাকি ও এশুমেশার দেবতাদের মধ্যে যে যুদ্ধ হয়েছিল তার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটানো হয়।[৫৪]
হুরীয় ও হিট্টীয়
[সম্পাদনা]হুরীয় ও হিট্টীয় পৌরাণিক সাহিত্যে (যা খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দের মধ্য থেকে অন্তভাগের মধ্যে বিকাশ লাভ করেছিল) কথিত হয়েছে, তরুণতর দেবদেবীগণ দেবতাদের প্রবীণতম প্রজন্মটিকে প্রেতলোকে নির্বাসিত করেছিল।[৫৫][৫৭] সেখানে তাঁরা দেবী লেলওয়ানি কর্তৃক শাসিত হতেন।[৫৭] হিট্টীয় অনুলিপিকরবৃন্দ এই দেবদেবীদেরই আনুন্নাকির সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করেন।[৫৫][৫৬] প্রাচীন হুরীয় ভাষায় আনুন্নাকিদের বলা হয়েছে কারুইলেশ শিউনেশ (karuileš šiuneš), যার অর্থ "পূর্বতন প্রাচীন দেবগণ"[৫৮] বা কাট্টেরেশ শিউনেশ (kattereš šiuneš), অর্থাৎ "পৃথিবীর দেবগণ"।[৫৮] হিট্টীয় ও হুরীয় সনদগুলিতে প্রায়শই পুরনো দেবতাদের নামে শপথবাক্য রচিত হত, যাতে সেই শপথ রক্ষা সুনিশ্চিত করা যায়।[৫৫][৫৮] একটি পুরাণকথায় দেখা যায়, প্রস্তর দৈত্য উল্লিকুম্মি দেবতাদের ভয় দেখিয়েছিল[৫৯] এয়া (পরবর্তীকালে যিনি এনকি নামে পরিচিত হন) পূর্বতন দেবতাদের আদেশ করেন স্বর্গকে পৃথিবী থেকে পৃথক করার উপযোগী একটি অস্ত্র খুঁজে বের করতে।[৫৫][৬০] তাঁরা সেই অস্ত্র খুঁজে আনেন এবং সেটি দিয়ে উল্লিকুম্মির পা দু’টি কেটে দেন।[৬০]
হুরীয় ও হিট্টীয় গ্রন্থে আনুন্নাকি সদস্যদের নাম প্রায়শই আলাদা হলেও[৫৬] এই দেবমণ্ডলীর সদস্যসংখ্যা সব ক্ষেত্রেই আট।[৫৬] একটি হিট্টীয় আচারে পুরনো দেবতাদের নাম নিম্নরূপ: "ভবিষ্যদ্বক্তা আদুনতার্রি, স্বপ্নব্যাখ্যাতা জুলকি, পৃথিবীর প্রভু ইরপিটিয়া, নরা, নমশরা, মিনকি, আমুনকি ও আপি।"[৫৬] হুরীয়-হিট্টীয় ধর্মে পুরনো দেবতাদের কোনও শনাক্তকরণযোগ্য কাল্ট ছিল না।[৫৬] বদলে হুরীয় ও হিট্টীয়রা মাটিতে গর্ত খুঁড়ে সেখানে শূকরছানা বলি দিয়ে দেবতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা করত।[৬১] আচারগত শুদ্ধিকরণের কাজে প্রায়শই পুরনো দেবতাদের আবাহন করা হত।[৬২] প্রেতলোকে দেবতাদের নির্বাসন-সংক্রান্ত হিট্টীয় উপাখ্যানটির সঙ্গে গ্রিক কবি হেসিওডের থিওগোনি গ্রন্থে উল্লিখিত অলিম্পিয়ান দেবমণ্ডলী কর্তৃক টাইটানদের ক্ষমতাচ্যুত করার বিবরণের ঘনিষ্ঠ সাদৃশ্য লক্ষিত হয়।[৬৩] গ্রিক আকাশ-দেবতা ইউরেনাস (যাঁর নামের অর্থ "স্বর্গ") ছিলেন টাইটানদের বাবা। [৬৪] তাঁর চরিত্রটির উৎস ছিল আনুর হিট্টীয় রূপটি।[৬৫] হেসিওডের উপাখ্যানে ইউরেনাসকে তাঁর পুত্র ক্রোনাস খোজা করে দিয়েছিলেন,[৬৬] ঠিক যেমন করে হিট্টীয় কাহিনিতে আনুকে তাঁর পুত্র কুমারবি খোজা করে দেন।[৬৭]
ছদ্মপ্রত্নতত্ত্ব
[সম্পাদনা]ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত একাধিক বইতে (প্রথম বইটি ছিল ১৯৬৮ সালে প্রকাশিত চ্যারিয়টস অফ দ্য গডস?) সুইস ছদ্মপ্রত্নতত্ত্ববিদ এরিক ফন দানিকেন দাবি করেন যে, ভিনগ্রহী "প্রাচীন মহাকাশচারীগণ" প্রাগৈতিহাসিক পৃথিবীতে এসেছিল। তিনি ধর্মসমূহের উৎসকে ভিনগ্রহী জাতিগুলির সঙ্গে সংস্পর্শে আসার প্রতিক্রিয়া বলে ব্যাখ্যা করেন এবং প্রমাণস্বরূপ সুমেরীয় গ্রন্থাবলি ও পুরাতন নিয়মের বিভিন্ন ব্যাখ্যা উপস্থাপনা করেন।[৬৮][৬৯][৭০]
১৯৭৬ সালে প্রকাশিত দ্য টুয়েলফথ প্ল্যানেট গ্রন্থে রাশিয়ান-আমেরিকান লেখক জেকারিয়া সিৎচিন দাবি করেন যে, আনুন্নাকি সদস্যেরা প্রকৃতপক্ষে ছিলেন অনাবিষ্কৃত গ্রহ নিবিরু থেকে আগত উন্নত হিউম্যানয়েড ভিনগ্রহী প্রজাতি। প্রায় ৫০০,০০০ বছর আগে তারা পৃথিবীতে এসেছিল এবং এই গ্রহ যে মূল্যবান ধাতব সম্পদে সমৃদ্ধ তা আবিষ্কার করার পর স্বর্ণখনি তৈরির জন্য একটি ঘাঁটি নির্মাণ করেছিল।[৬৮][৬৯][৭১] সিৎচিনের মতে, খনিশ্রমিক হিসাবে কাজ করার জন্য আনুন্নাকি সদস্যেরা ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের প্রজাতি ও হোমো ইরেকটাস-এর মধ্যে সংকরায়ন ঘটিয়ে দাসপ্রজাতি হিসেবে মানব প্রজাতির সৃষ্টি করে।[৬৮][৬৯][৭১] সিৎচিন আরও দাবি করেন যে, আন্টার্কটিক হিমবাহগুলির গলন শুরু হলে যে মহাপ্লাবন দেখা দেয়, তার ফলে আনুন্নাকি সদস্যেরা সাময়িকভাবে পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠ ও এই গ্রহের কক্ষপথ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়।[৭২] এই প্লাবনের ফলে পৃথিবীতে তাদের ঘাঁটিগুলি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।[৭২] সেই ঘাঁটিগুলি পুনর্নির্মাণের প্রয়োজন হয়। সেই বিপুল প্রক্রিয়ায় আরও মানুষের প্রয়োজন হওয়ায় আনুন্নাকি সদস্যবৃন্দ মানবজাতিকে কৃষিকার্য শিক্ষা দেয়।[৭২]
রোনাল্ড এইচ. ফ্রিৎজ লিখেছেন যে, সিৎচিনের মতে, "আনুন্নাকি সদস্যবৃন্দ পিরামিড এবং পৃথিবী জুড়ে অন্য সমস্ত অতিকায় স্থাপনাগুলি নির্মাণ করেছিল। কারণ প্রাচীন মহাকাশচারী তত্ত্বের প্রবক্তারা মনে করেন, অতি উচ্চ প্রযুক্তির সাহায্য ব্যতিরেকে এই সকল স্থাপনার নির্মাণ অসম্ভব।"[৬৮] দ্য স্টেয়ারওয়ে টু হেভেন (১৯৮০) ও দ্য ওয়ার্স অফ গডস অ্যান্ড মেন (১৯৮৫) সহ পরবর্তীকালে প্রকাশিত বইগুলিতে সিৎচিন এই পুরাণকথাটি বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেন।[৭৩] দি এন্ড অফ ডেজ: আর্মাগেডন অ্যান্ড দ্য প্রফেসি অফ দ্য রিটার্ন (২০০৭) গ্রন্থে সিৎচিন ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, মেসোআমেরিকান লং কাউন্ট পঞ্জিকার সমাপ্তির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ২০১২ সালের মধ্যেই আনুন্নাকি সদস্যেরা পৃথিবীতে ফিরে আসবে।[৬৯][৭৩] মূলধারার ইতিহাসবিদগণ সর্বজনীনভাবেই সিৎচিনের মত প্রত্যাখ্যান করেন এবং তাঁর বইগুলিকে ছদ্মপ্রত্নতাত্ত্বিক রচনা হিসেবে চিহ্নিত করেন।[৭৪] তাঁরা বলেন যে, সিৎচিনের বইগুলি পড়ে মনে হয় প্রসঙ্গবহির্ভূতভাবে সুমেরীয় গ্রন্থাবলি থেকে উদ্ধৃতি ব্যবহার করে, উদ্ধৃতিগুলির আগাগোড়া ছেঁটে এবং সুমেরীয় শব্দাবলির ভুল অনুবাদ করে সেগুলির স্বীকৃত সংজ্ঞার পরিবর্তে সম্পূর্ণ অন্য অর্থ দান করে সিৎচিন ইচ্ছাকৃতভাবে সেই গ্রন্থাবলির ভুল ব্যাখ্যা উপস্থাপনা করেছেন।[৭৫]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট Black ও Green 1992, পৃ. 34।
- ↑ ক খ Leemings 2009, পৃ. 21।
- ↑ Kramer 1961, পৃ. 41।
- ↑ Kramer 1963, পৃ. 122।
- ↑ Coleman ও Davidson 2015, পৃ. 108।
- ↑ Kramer 1983, পৃ. 115–121।
- ↑ ক খ Kramer 1961, পৃ. 72–73।
- ↑ ক খ Kramer 1961, পৃ. 72–75।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ ড ঢ ণ Leick 1998, পৃ. 8।
- ↑ Falkenstein 1965, পৃ. 127–140।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ Brisch 2016।
- ↑ ক খ গ Black ও Green 1992, পৃ. 93।
- ↑ Black ও Green 1992, পৃ. 93–94।
- ↑ Black ও Green 1992, পৃ. 130–131।
- ↑ Black ও Green 1992, পৃ. 130।
- ↑ ক খ গ ঘ Black ও Green 1992, পৃ. 98।
- ↑ ক খ Nemet-Nejat 1998, পৃ. 185।
- ↑ Black ও Green 1992, পৃ. 102।
- ↑ ক খ গ ঘ Black ও Green 1992, পৃ. 94।
- ↑ ক খ Nemet-Nejat 1998, পৃ. 186।
- ↑ ক খ Nemet-Nejat 1998, পৃ. 186–187।
- ↑ Nemet-Nejat 1998, পৃ. 186–188।
- ↑ Black ও Green 1992, পৃ. 174।
- ↑ ক খ Black ও Green 1992, পৃ. 44–45।
- ↑ ক খ Black ও Green 1992, পৃ. 52।
- ↑ Katz 2003, পৃ. 403।
- ↑ Kramer 1963, পৃ. 123।
- ↑ Kramer 1963, পৃ. 122–123।
- ↑ Kramer 1963, পৃ. 180।
- ↑ ক খ Nemet-Nejat 1998, পৃ. 179।
- ↑ Nemet-Nejat 1998, পৃ. 187-189।
- ↑ Edzard 1965, পৃ. 17–140।
- ↑ ক খ গ Wolkstein ও Kramer 1983, পৃ. 60।
- ↑ Nemet-Nejat 1998, পৃ. 201–203।
- ↑ Black ও Green 1992, পৃ. 108–109।
- ↑ ক খ গ Nemet-Nejat 1998, পৃ. 203।
- ↑ Black ও Green 1992, পৃ. 182–184।
- ↑ Black ও Green 1992, পৃ. 135।
- ↑ Rogers 1998, পৃ. 13।
- ↑ Levenda 2008, পৃ. 29।
- ↑ Levenda 2008, পৃ. 29–30।
- ↑ Leick 2003, পৃ. 100।
- ↑ Dalley 1989, পৃ. 156।
- ↑ ক খ গ Dalley 1989, পৃ. 159।
- ↑ Black ও Green 1992, পৃ. 106।
- ↑ ক খ Leick 1998, পৃ. 85।
- ↑ ক খ Leick 2003, পৃ. 96।
- ↑ Dalley 1989, পৃ. 112।
- ↑ Dalley 1989, পৃ. 113।
- ↑ Pritchard 2010, পৃ. 33–34।
- ↑ Pritchard 2010, পৃ. 34-35।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Oshima 2010, পৃ. 145।
- ↑ ক খ Oshima 2010, পৃ. 145–146।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Oshima 2010, পৃ. 146।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Leick 1998, পৃ. 141।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ Collins 2002, পৃ. 225।
- ↑ ক খ Van Scott 1998, পৃ. 187।
- ↑ ক খ গ Archi 1990, পৃ. 114।
- ↑ Puhvel 1987, পৃ. 25–26।
- ↑ ক খ Puhvel 1987, পৃ. 26।
- ↑ Collins 2002, পৃ. 225–226।
- ↑ Collins 2002, পৃ. 226–227।
- ↑ Puhvel 1987, পৃ. 26–27।
- ↑ Puhvel 1987, পৃ. 27–29।
- ↑ Puhvel 1987, পৃ. 29–30।
- ↑ Puhvel 1987, পৃ. 27–30।
- ↑ Puhvel 1987, পৃ. 25–26, 29–30।
- ↑ ক খ গ ঘ Fritze 2016, পৃ. 292।
- ↑ ক খ গ ঘ Robertson 2016।
- ↑ Story 1980, পৃ. 3–8
- ↑ ক খ Fritze 2009, পৃ. 212।
- ↑ ক খ গ Fritze 2009, পৃ. 212–213।
- ↑ ক খ Fritze 2009, পৃ. 213।
- ↑ Fritze 2009, পৃ. 213–214।
- ↑ Fritze 2009, পৃ. 214।
গ্রন্থপঞ্জি
[সম্পাদনা]- Amin, Osama Shukir Muhammed (৩১ মার্চ ২০১৪), "Copper alloy foundation figurines with pegs representing Gods", Ancient History Encyclopedia
- Archi, Alfonso (১৯৯০), "The Names of the Primeval Gods", Orientalia, NOVA, Rome, Italy: Gregorian Biblical Press, 59 (2): 114–129, জেস্টোর 43075881
- Black, Jeremy; Green, Anthony (১৯৯২), Gods, Demons and Symbols of Ancient Mesopotamia: An Illustrated Dictionary, London, England: The British Museum Press, আইএসবিএন 0-7141-1705-6
- Brisch, Nicole (২০১৬), "Anunna (Anunnaku, Anunnaki) (a group of gods)", Ancient Mesopotamian Gods and Goddesses, University of Pennsylvania Museum, ২০১৯-০৯-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৬-১৯
- Coleman, J. A.; Davidson, George (২০১৫), The Dictionary of Mythology: An A-Z of Themes, Legends, and Heroes, London, England: Arcturus Publishing Limited, পৃষ্ঠা 108, আইএসবিএন 978-1-78404-478-7
- Collins, Billie Jean (২০০২), "Necromancy, Fertility and the Dark Earth: The Use of Ritual Pits in Hittite Cult", Mirecki, Paul; Meyer, Marvin, Magic and Ritual in the Ancient World, Leiden, The Netherlands: Brill, পৃষ্ঠা 224–233, আইএসবিএন 90-04-10406-2
- Dalley, Stephanie (১৯৮৯), Myths from Mesopotamia: Creation, the Flood, Gilgamesh, and Others, Oxford, England: Oxford University Press, আইএসবিএন 0-19-283589-0
- Edzard, D. O. (১৯৬৫), "Mesopotamien. Die Mythologie der Sumerer und Akkader", Wörterbuch der Mythologie, erste Abteilung, I (Götter und Mythen im Vorderen Orient): 17–140
- Falkenstein, A. (১৯৬৫), "Die Anunna in der sumerischen Überlieferung", Assyriological Studies (16): 127–140
- Fritze, Ronald H. (২০০৯), Invented Knowledge: False History, Fake Science and Pseudo-Religions, London, England: Reaktion Books, আইএসবিএন 978-1-86189-430-4
- Fritze, Ronald H. (২০১৬), Egyptomania: A History of Fascination, Obsession and Fantasy, London, England: Reaktion Books, আইএসবিএন 978-1-78023-639-1
- Katz, D. (২০০৩), The Image of the Underworld in Sumerian Sources, Bethesda, Maryland: CDL Press, পৃষ্ঠা 403
- Kramer, Samuel Noah (১৯৬১), Sumerian Mythology: A Study of Spiritual and Literary Achievement in the Third Millennium B.C.: Revised Edition, Philadelphia, Pennsylvania: University of Pennsylvania Press, আইএসবিএন 0-8122-1047-6
- Kramer, Samuel Noah (১৯৬৩), The Sumerians: Their History, Culture, and Character, Chicago, Illinois: University of Chicago Press, আইএসবিএন 0-226-45238-7
- Kramer, Samuel Noah (১৯৮৩), "The Sumerian Deluge Myth: Reviewed and Revised", Anatolian Studies, British Institute at Ankara, 33: 115–121, জেস্টোর 3642699, ডিওআই:10.2307/3642699
- Leemings, David (২০০৯), The Oxford Companion to World Mythology, Oxford University Press, পৃষ্ঠা 21, আইএসবিএন 978-0-19-538708-7
- Leick, Gwendolyn (১৯৯৮) [1991], A Dictionary of Ancient Near Eastern Mythology, New York City, New York: Routledge, আইএসবিএন 0-415-19811-9
- Leick, Gwendolyn (২০০৩), The Babylonians: An Introduction, New York City, New York and London, England: Routledge, আইএসবিএন 0-415-25315-2
- Levenda, Peter (২০০৮), Stairway to Heaven: Chinese Alchemists, Jewish Kabbalists, and the Art of Spiritual Transformation, New York City, New York and London, England: Continuum International Publishing Group, Inc., আইএসবিএন 978-0-8264-2850-9
- Nemet-Nejat, Karen Rhea (১৯৯৮), Daily Life in Ancient Mesopotamia, Daily Life, Santa Barbara, California: Greenwood, আইএসবিএন 978-0-313-29497-6
- Oshima, Takayoshi (২০১০), ""Damkianna Shall Not Bring Back Her Burden in the Future": A new Mythological Text of Marduk, Enlil and Damkianna", Horowitz, Wayne; Gabbay, Uri; Vukosavokić, Filip, A Woman of Valor: Jerusalem Ancient Near Eastern Studies in Honor of Joan Goodnick Westenholz, 8, Madrid, Spain: Biblioteca del Próximo Oriente Antiguo, আইএসবিএন 978-84-00-09133-0
- Pritchard, James B., সম্পাদক (২০১০), The Ancient Near East: An Anthology of Texts and Pictures, Princeton University Press, পৃষ্ঠা 34, আইএসবিএন 978-0-691-14726-0
- Puhvel, Jaan (১৯৮৭), Comparative Mythology, Baltimore, Maryland: Johns Hopkins University Press, আইএসবিএন 0-8018-3938-6
- Robertson, David G. (২০১৬), Cox, James; Sutcliffe, Steven; Sweetman, William, সম্পাদকগণ, UFOs, Conspiracy Theories and the New Age: Millennial Conspiracism, Bloomsbury Advances in Religious Studies, London, England: Bloomsbury Publishing, আইএসবিএন 978-1-4742-5320-8
- Rogers, John H. (১৯৯৮), "Origins of the Ancient Astronomical Constellations: I: The Mesopotamian Traditions", Journal of the British Astronomical Association, London, England: The British Astronomical Association, 108 (1): 9–28, বিবকোড:1998JBAA..108....9R
- Story, Ronald. (1976). The Space Gods Revealed: A Close Look at the Theories of Erich von Däniken. Harper & Row. আইএসবিএন ০-০৬-০১৪১৪১-৭
- Van Scott, Miriam (১৯৯৮), The Encyclopedia of Hell: A Comprehensive Survey of the Underworld, New York City, New York: Thomas Dunne Books/St. Martin's Griffin, আইএসবিএন 0-312-18574-X
- Willis, Roy (২০১২), World Mythology, New York: Metro Books, পৃষ্ঠা 62, আইএসবিএন 978-1-4351-4173-5
- Wolkstein, Diane; Kramer, Samuel Noah (১৯৮৩), Inanna: Queen of Heaven and Earth: Her Stories and Hymns from Sumer, New York City, New York: Harper&Row Publishers, আইএসবিএন 0-06-090854-8