বিষয়বস্তুতে চলুন

কানন দেবী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

এটি এই পাতার বর্তমান সংস্করণ, যা WikitanvirBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২৩:৪৩, ১৯ মে ২০২৪ তারিখে সম্পাদিত হয়েছিল (বট নিবন্ধ পরিষ্কার করছে, কোনো সমস্যায় পরিচালককে জানান)। উপস্থিত ঠিকানাটি (ইউআরএল) এই সংস্করণের একটি স্থায়ী লিঙ্ক।

(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)
কানন দেবী
১৯৩০-এর দশকে কানন দেবী
১৯৩০-এর দশকে কানন দেবী
জন্ম
কানন দেবী

(১৯১৬-০৪-২২)২২ এপ্রিল ১৯১৬
মৃত্যু১৭ জুলাই ১৯৯২(1992-07-17) (বয়স ৭৬)
জাতীয়তাভারতীয়
অন্যান্য নামকানন বালা
নাগরিকত্বভারতীয়
পেশা
  • অভিনেত্রী* গায়িকা* পরিচালক* প্রযোজক
কর্মজীবন১৯২৬, ১৯৩১–১৯৫৯
পরিচিতির কারণঅভিনেত্রী, গায়িকা
উল্লেখযোগ্য কর্ম
নিচে দেখুন
আদি নিবাসহাওড়া
সন্তান
  • *
পিতা-মাতা
  • রতন চন্দ্র দাস (বাবা)
পুরস্কারনিচে দেখুন

কানন দেবী (এপ্রিল ২২, ১৯১৬ – জুলাই ১৭, ১৯৯২), যিনি কানন বালা নামেও পরিচিত;[] ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি অভিনেত্রী এবং গায়িকা। যিনি ভারতীয় চলচ্চিত্রে নায়িকাদের মধ্যে প্রথম গায়িকা এবং বাংলা চলচ্চিত্রের প্রথম তারকা হিসেবে স্বীকৃত।[] সাধারণত দ্রুত লয়ে তাঁর গান গাওয়ার ধরন নিউ থিয়েটার, কলকাতার ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

বহু প্রতিভার কানন দেবী অভিনয়ের পাশাপাশি নৃত্য এবং সঙ্গীতেও ছিলেন পারদর্শী। প্রায় ৭০-এর অধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। এছাড়াও বিজ্ঞাপন চিত্রেও দেখা যায় তাঁকে। কানন দেবীর আত্মজীবনী সবারে আমি নমি। শিল্প মাধ্যমে অসাধারণ অবদানের জন্যে ভারত সরকার তাকে ১৯৬৪ সালে পদ্মশ্রী উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৯৭৬ সালে তিনি দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার লাভ করেন।

প্রাথমিক জীবন

[সম্পাদনা]

কানন দেবীর ১৯১৬ সালে হাওড়া, বেঙ্গল, ব্রিটিশ ভারতে জন্ম নেন। তিনি ছিলেন একজন রক্ষিতার সন্তান। তাঁর বাবা রতন চন্দ্র দাস ছিলেন সওদাগর অফিসের কেরানি। তাঁর বাবার একটি ছোট দোকানও ছিলো। নয় বছর বয়সে কাননের বাবা মারা যান। বাবার মৃত্যুর পর কাননের মা তাঁর দুই কন্যাকে নিয়ে এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের বাড়িতে রাঁধুনী ও ঝিয়ের কাজ শুরু করেন। তাই তাঁরা অসম্ভব দারিদ্র্যের মাঝে একটি ছোট বাসা ভাড়া নেন। দরিদ্রতার কারণে কানন মাত্র বার-তের বছর বয়সেই ম্যাডানের স্টুডিওতে হাজির হন অভিনয় করতে। এবং সেই সময়েই নির্বাক চলচ্চিত্র জয়দেবে (১৯২৬) অভিনয় করেন।[][]

অভিনয় কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

১৯২৬ সালে জয়তিশ বন্দোপাধ্যায়ের জয়দেবে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে কানন দেবীর অভিনয়ের শুরু হলেও তাঁর সত্যিকারের অভিনয় জীবন শুরু হয় ১৯৩০ সালে। মূলত দারিদ্রতার কারণে কিশোর বয়স থেকেই তাঁকে পর্দায় নগ্নতার দৃশ্যে অভিনয় করতে হয়েছে। ১৯৩১ সালে জ্যোতিশ বন্দোপাধ্যায়ের জোর বরাত পূর্ণাঙ্গ সবাক চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্যে নায়ক তাঁকে জড়িয়ে ধরে ঠোটে চুমু খাওয়ায় তিনি অপমানিত ও ব্যথিত বোধ করেন। যদিও পরিচালকের নির্দেশেই নায়ক তাঁকে না জানিয়েই এই কাজ করেছিলেন। অভিভাবকহীন নিম্নবিত্তের মেয়ে হওয়ায় নানাভাবে তাঁকে অর্থের লোভ দেখিয়ে নগ্ন দৃশ্যে অভিনয়ের জন্যে বাধ্য করা হতো। ১৯৩৫ সালে সতীশ দাশগুপ্তের বাসব দত্তা চলচ্চিত্রে তার অনিচ্ছায় নগ্নতার প্রদর্শন ছিলো। এছাড়াও তার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে পরিচালকেরা অর্থিকভাবেও তাকে ঠকাতেন। ১৯৩৫ সালে মুক্তি পায় তার জ্যোতিশ বন্দোপাধ্যায়ের মানময়ী গার্লস স্কুল এবং এর মাধ্যমেই তিনি নিজেকে চলচ্চিত্র জগতে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এরপর ১৯৩৭ সালে মুক্তি চলচ্চিত্র তাঁকে সর্বপ্রথম অভিনেত্রী হিসেবে সফলতা এনে দেয়।[][]

শ্রীমতি পিকচারস

[সম্পাদনা]

১৯৩৭ সাল থেকে ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত কানন দেবীর জন্য সবচেয়ে বেশি খ্যাতির সময় ছিল। তিনি এ সময় সম্ভ্রান্ত কানন দেবীতে পরিণত হন কানন বালা থেকে। তিনি তখন রোমান্টিক নায়িকার বদলে স্ত্রী ও মায়ের ভূমিকাতেই বেশি অভিনয় করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি শ্রীমতি পিকচার্স গড়ে তোলেন যার বেশির ভাগ ছবিই ছিল শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কাহিনী অবলম্বনে। এই কোম্পানীর ছবিতে তিনি কেবল অভিনয় ও প্রযোজনাই করেন নি, তিনি পরিচালনাও করেন। তার ছবির পরিচালকের একটি তিন সদস্য বিশিষ্ট দল ছিল যার নাম সব্যসাচী। তিনি তিন জনের একজন ছিলেন।[]

গায়িকা

[সম্পাদনা]

কানন দেবী একজন ভাল গায়িকাও ছিলেন। তিনি ওস্তাদ আল্লারাখার কাছে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের শিক্ষা নেন। এছাড়াও তিনি ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়, রাইচাঁদ বড়াল, কাজী নজরুল ইসলাম, অনাদি দস্তিদার ও পঙ্কজ কুমার মল্লিকদের কাছেও তালিম নেন। তিনি আধুনিক গান ছাড়াও রবীন্দ্র সঙ্গীতও গেয়েছিলেন, যা রবীন্দ্রনাথকেও খুশি করে তুলেছিল। এ গানকে তিনি ভদ্রঘর থেকে বাংলার সাধারণ ঘরেও জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন।[]

প্রভাব

[সম্পাদনা]

কানন দেবী ভীষণ জনপ্রিয় ছিলেন। চলচ্চিত্রে ইতিহাসবিদ রবি বসু লিখেছেন যে কানন বালাকে দেখে অনেক যুবক ও প্রৌঢ়ের হৃৎস্পন্দন বেড়ে যেত। রূপবাণী সিনেমা হলে এক উদ্ভ্রান্ত যুবক মোহগ্রস্ত হয়ে তার সিনেমার রোমান্টিক দৃশ্যের সময় পর্দার দিকে ছুটে গিয়েছিল তাকে ধরতে।কলকাতার রাস্তায় চট বিছিয়ে তার আলোকচিত্র বিক্রি হত। মহিলারা তার ফ্যাশনে শাড়ি-ব্লাউজ পরা শুরু করেন। এমনকি কানের দুলও তৈরি করান তারা।[]

চলচ্চিত্রের তালিকা

[সম্পাদনা]
  • ঋষির প্রেম
  • প্রহলাদ
  • কংসবধ
  • বিষ্ণুমায়া
  • মা
  • কণ্ঠহার
  • বাসবদত্তা
  • বিষবৃক্ষ
  • পরাজয়
  • যোগাযোগ
  • মুক্তি (১৯৩৭)
  • বিদ্যাপতি
  • সাথী
  • পরিচয়
  • শেষ উত্তর
  • মেজদিদি

পুরস্কার এবং সম্মাননা

[সম্পাদনা]
ভারতের ২০১১ সালের ডাকটিকিটে দেবী

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. কোবিদ (জুলাই ১৮, ২০১৩)। "হার্টথ্রব নায়িকা-গায়িকা কানন দেবীর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি"বাংলানিউজ২৪.কম। ১১ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ৩০, ২০১৪ 
  2. মুরশিদ, গোলাম (২০০৫)। "সুকুমারী থেকে সুচিত্রা"। অন্যদিন ঈদ সংখ্যা। মাজহারুল ইসলাম: ১০৭।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য);
  3. "মীনা কুমারী, কানন দেবী নূতন ও দেবিকা রানীর নামে স্মারক ডাকটিকিট"দৈনিক প্রথম আলো। ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১১। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ৩০, ২০১৪  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]