উম্মে রুমান বিনতে আমের-এর উৎস দেখুন

{{Infobox religious biography|name= উম্মে রুমান বিনতে আমের
| native_name      = أم رومان بنت عامر
| native_name_lang = ar
| image            =
| image_size       =
| caption          =
| background       = skyblue
| title            =
| religion         = [[ইসলাম]]
| birth_name       = উম্মে রুমান বিনতে আমের বিন আওইমার বিন আবদ শামস আল-কানানিয়াহ<br> أم رومان بنت عامر بن عويمر بن عبد شمس الكنانية
| birth_date       = 
| birth_place      = [[তিহামাহ্]], [[আরব উপদ্বীপ]] {{small|(বর্তমান [[সৌদি আরব]])}}
| occupation       = 
| era              =  [[ইসলামের ইতিহাস|প্রারম্ভিক ইসলামী যুগ]]
| death_date       = ৬২৮ খ্রিষ্টাব্দে
| death_place      = [[মদিনা]], [[হেজাজ]], [[আরব উপদ্বীপ]] {{small|(বর্তমান [[সৌদি আরব]])}}
| resting_place    = [[মদিনা]]
| known_for        = *মহিলা সাহাবী
*[[মুহাম্মদ|মুহাম্মদের]] শাশুড়ি
*[[আয়িশা|আয়িশার]] মা
*[[আবু বকর|আবু বকরের]] স্ত্রী
| children         = 
*[[তুফায়েল ইবনে আল-হারিস]]
*[[আবদুর রহমান ইবনে আবি বকর]]
*[[আয়িশা|আয়িশা বিনতে আবি বকর]]
| spouse           = 
*আল-হারিস ইবনে সাখবারাহ {{small|(মৃত্যুর আগ পর্যন্ত)}}
*[[আবু বকর]] {{small|(তার মৃত্যু পর্যন্ত)}}
| relatives        = [[মুহাম্মাদ]] (জামাতা)
| father           = আমির ইবনে উওয়াইমির
| mother           = 
| lineage = [[কিনানা]]
}}
'''রুমান বিনতে আমের আল-ফারাসিয়া আল-কানানিয়া''', ছিলেন মহিলা সাহাবীদের মধ্যে একজন ধার্মিক মহিলা। তিনি [[আবু বকর|আবু বকরের]] স্ত্রী ছিলেন। তিনি [[আয়িশা]] এবং [[আবদুর রহমান ইবনে আবি বকর|আব্দুর রহমানের]] মা। [[আবু বকর|আবু বকরের]] পর তিনি মক্কায় ইসলাম গ্রহণ করেন, আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি দেন এবং মদিনায় হিজরত করেন এবং ষষ্ঠ হিজরীতে তিনি ইন্তিকাল করেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ=তালহামি|প্রথমাংশ=ঘাদা|শিরোনাম=মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার মহিলাদের ঐতিহাসিক অভিধান|বছর=২০১২|পাতাসমূহ=৬৩২–৬৩৪}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ=পাথর|প্রথমাংশ=ক্যারোলিন|শিরোনাম=উত্তর আফ্রিকার সূচিকর্ম|ইউআরএল=https://archive.org/details/embroideriesofno00ston|ইউআরএল-সংগ্রহ=registration|বছর=১৯৮৫|পাতা=[https://archive.org/details/embroideriesofno00ston/page/76 ৭৬]|উক্তি="... এবং সম্ভবত এটি ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে মুহাম্মদের প্রিয় স্ত্রী আয়েশা, যার নামের অর্থ 'জীবন্ত ব্যক্তি', তিনি ছিলেন উম্মে রুমানের কন্যা (মৃত্যু ৬২৭)।}}</ref>

== নাম ও বংশ পরিচয় ==
উম্মে রুমানের নাম নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে, [[ইবনে ইসহাক]] বলেছেন, তার আসল নাম '''যায়নাব'''। অনেকে বলেছেন তার নাম '''দা'আদ'''।<ref name="ReferenceA">{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[আল-ইসাবা-৪/৪৩৩]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[আর-রাওদ আল-আন্‌ফ-৪/১২]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref> তবে তিনি ইতিহাসে উম্মে রুমান নামে পরিচিত ছিলেন। তার স্বামীর নাম ছিলো [[আবদুল্লাহ ইবনে আল হারিস]]।

== ইসলাম পূর্ব জীবন ==
আরব উপ-দ্বীপের আস-সারাত অঞ্চলে উম্মে রুমানের জন্ম হয়<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[ মা‘জাম আল-বুলদান-৩/২০৪-২০৫ ]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref> এবং সেখানেই বেড়ে ওঠেন। উম্মে রুমানের স্বামী [[আবদুল্লাহ ইবনে আল হারিস]] মক্কায় বসবাসের ইচ্ছায় আস সারাত থেকে তার স্ত্রী উম্মে রুমান ও ছেলে [[তুফায়েল ইবনে আল-হারিস]]<nowiki/>কে সঙ্গে নিয়ে মক্কায় আসেন এবং আবু বকরের সাথে পারিবারিক চুক্তিবদ্ধ হন। এভাবে তিনি আবু বকরের আশ্রয়ে পরিবারসহ মক্কায় বসবাস শুরু করেন। অল্প কিছু দিনের মধ্যে তিনি মারা গেলে উম্মে রুমান বিধবা হয়ে পরেন। পরে আবু বকর তাকে বিবাহ করে নিজের পরিবারের সাথে সংযুক্ত করে নেন। এই ঘরেই জন্মগ্রহণ করেন [[আয়িশা]] ও [[আবদুর রহমান ইবনে আবি বকর|আবদুর রহমান ইবনে আবু বকর]]।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[প্রাগুক্ত; নিসা’ হাওলাদার রাসূল -২৬৪]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref> পরবর্তীকালে এই আয়িশা [[মুহাম্মাদের বৈবাহিক জীবন|উম্মুল মুমিনীন]] হন।

আবু বকরের প্রথম স্ত্রী ছিলেন [[কাতিলা বিনতে আবদিল উজ্জা]]। তার গর্ভে [[আবদুল্লাহ ইবনে আবু বকর]] ও মেয়ে [[আসমা বিনতে আবি বকর]] জন্মগ্রহণ করেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[নিসা‘ মাবাশ্‌শারাত বিল-জান্নাহ্‌-৮৪]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref>

== ইসলাম গ্রহণ ও হিজরত ==
উম্মে রুমান ইসলামের প্রাথমিক যুগেই তার স্বামী [[আবু বকর|আবু বকরের]] দাওয়াতে ইসলাম গ্রহণ করেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[তাহযীব আল-আসমা’ ওয়াল-লুগাত-২/১৮৩]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref> এরপর তার স্বামী [[আবু বকর]] ও [[মুহাম্মদ|মুহাম্মদ (সা.)]] [[মক্কা]] থেকে [[মদিনা|মদিনায়]] [[হিজরত]] করে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। তখন মদিনায় পৌঁছার পরেই নবি [[যায়েদ ইবনে হারেসা|যায়িদ ইবনে হারিসা]] ও [[আবু রাফি]] কে মক্কায় পাঠান তাঁর পরিবারকে নেওয়ার জন্য। সে তাদের সাথে উম্মে [[আবু বকর|আবু বকরের]] পরিবারের উম্মে রুমান,[[আসমা বিনতে আবি বকর|আসমা]],[[আয়িশা]] ও [[আবদুল্লাহ ইবনে আবু বকর|আবদুল্লাহ]]ও মদিনায় হিজরত করেন। <ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[তাবাকাত-৮/২৭৬]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref>

এই দলের সঙ্গে [[তালহা ইবনে উবাইদিল্লাহ|তালহা ইবন উবাইদিল্লাহ]], [[উম্মে কুলসুম বিনতে মুহাম্মাদ]], [[ফাতিমা]], উম্মুল মু’মিনীন [[সাওদা বিনতে জামআ]], [[উম্মে আইমান|উম্মে আয়মান]] ও [[উসামা ইবনে যায়িদ]] যোগদান করেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[আনসাব আল-আশরাফ-১/২৬৯-২৭০]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref>

উম্মে রুমান [[মদিনা]] শহরের আবহাওয়া নিজেদের অনুকূলে না হওয়ার জন্য সন্তান-সন্তানাতিদের নিয়ে [[মদিনা|মদিনার]] নিকটবর্তী [[বনু আল-হারিস|বনু আল হারিস ইবনে খাযরাজের]] মহল্লায় অবতরণ করেন এবং সাত-আট মাস এখানেই বসবাস করেন। এর মাঝে [[আয়িশা]] ও [[আবু বকর]] মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন, পরে উম্মে রুমানের সেবায় পুনরায় সুস্থ হন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[সহীহ আল-বুখারী : বাবুল হিজরাহ অধ্যায়]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[তাবাকাত-৮/৬৩]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref>

== পারিবারিক জীবন ==
উম্মে রুমান একজন ধর্মপরায়ণ ও অতিথিপরায়ণ মহিলা ছিলেন। ইসলাম গ্রহণের পর থেকেই তিনি নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে ইসলামের জ্ঞান আহরণ ও আচার-আচরণ শিক্ষায় একান্ত মনোনিবেশ করেন। তিনি ঘরের কাজের পাশাপাশি ছেলে [[আবদুর রহমান ইবনে আবি বকর|আবদুর রহমান]] ও মেয়ে [[আয়িশা|আয়িশার]] প্রতি খুবই যত্নবান ছিলেন। ইসলামী শিক্ষায় সন্তানদের গড়ে তোলার একান্ত প্রচেষ্টা তিনি করতে থাকেন, এরই প্রতিফলন পরবর্তী জীবনে দেখা যায়, [[আয়িশা]] ও [[আবদুর রহমান ইবনে আবি বকর|আবদুর রহমানের]] মধ্যে। উম্মে রুমানের তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তা ও ইসলামী শিক্ষা এই পরিবারকে আদর্শ স্থানে পরিণত করে।

{{cquote|একদিন [[মুহাম্মদ]] [[আবু বকর|আবু বকরের]] গৃহে এসে দেখেন, [[আয়িশা]] দরজার চৌকাঠে হেলান দিয়ে কান্না করতেছে। তিনি উম্মে রুমানকে বললেন, আপনি আমার কথায় গুরুত্ব দেননি (''পূর্বে আয়িশাকে বকতে নিষেধ করেছিলেন'')। উম্মে রুমান বললেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ! এ মেয়ে আমার বিরুদ্ধে তার বাপের কাছে কথা বলে। [[মুহাম্মদ]] বললেন: [[আয়িশা]] যা কিছু করুক না কেন তাকে কষ্ট দিবেন না।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[আসহাবে রাসূলের জীবন কথা-৫/৫৭]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref> }}

[[খাওলা বিনতে হাকিম]] উম্মে রুমান বিনতে আমিরের সম্মতিতে [[আয়িশা]] ও [[মুহাম্মদ]] এর বিবাহের সম্বোধন করেছিলেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[মুসনাদে আহমাদ-৬/২১০-২১১]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=তাবাকাত-৮/৫৮|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref>

== আয়িশার বিরুদ্ধে দুর্নাম ==
হিজরী ৬ষ্ঠ সনে মুরাইসীর যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে কিছু দুষ্টচক্র [[আয়িশা|আয়িশার]] চরিত্রে কলঙ্কজনক লেপনের উদ্দেশ্যে দুর্নাম রটিয়ে দেয়। প্রায় এক মাস যাবত এই মিথ্যা দোষারোপের কথা [[মদিনা|মদিনার]] সমাজে চলতে থাকে। উম্মে রুমান এই কথা শোনার পর পরেই জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যান।<ref name="ReferenceB">{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[আ‘লাম আন-নিসা’-১/৪৭২]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref> যুদ্ধ থেকে ফিরে কঠিন এই এক মাস [[আয়িশা]] তাঁর মায়ের নিকট থাকেন। এরপরে আল্লাহ্‌ [[কুরআন|কুরআনের]] আয়াত অবতীর্ণ করে আয়িশার সতীত্বের ঘোষণা দেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[বুখারী-৬/১২৭]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[সূরা আন-নূর এর ১১-১২]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref> এতে মা-মেয়ের আনন্দের কোন শেষ ছিলোনা।

== মৃত্যু ==
[[আয়িশা|আয়িশার]] গুজব ঘটনার কথা শুনে উম্মে রুমান শারীরিক ও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পরেন এবং অসুস্থ হয়ে পরেন। এভাবেই তিনি হিজরী ৬ষ্ঠ সনের [[জ্বিলহজ্জ]] মাসে [[মদিনা|মদিনায়]] ইন্তেকাল করেন।<ref name="ReferenceB"/> ইতিহাসবিদগণের মতে, [[মুহাম্মদ|মুহাম্মদ (সা.)]] মাত্র পাঁচ ব্যক্তির কবরে নেমে লাশ শায়িত করেছেন তাদের মধ্যে তার শাশুড়ি উম্মে রুমান বিনতে আমির একজন।<ref name="ReferenceA"/><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[ আল-ইসতী‘আব-৪/৪৩ ]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[ওয়াফা আল-ওয়াফা-৩/৮৯৭]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref> [[মুহাম্মদ|মুহাম্মদ (সা.)]] তাকে জান্নাতীও বলেছেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=[তাবাকাত-৮/২৭৭]|শেষাংশ=|প্রথমাংশ=|বছর=|প্রকাশক=|অবস্থান=|পাতাসমূহ=|আইএসবিএন=}}</ref>

{{সাহাবা}}

== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা |3}}

[[বিষয়শ্রেণী:নারী সাহাবা]]
[[বিষয়শ্রেণী:মুহাম্মাদের পরিবার]]
[[বিষয়শ্রেণী:আবু বকরের পরিবার]]
[[বিষয়শ্রেণী:৬২৮-এ মৃত্যু]]