হিন্দুধর্মে মানবজীবনের উদ্দেশ্য চারটি। এই চারটি উদ্দেশ্যই পুরুষার্থ নামে পরিচিত। হিন্দুরা বিশ্বাস করেন, তাদের জীবনধারণের উদ্দেশ্য এই চারটি পুরুষার্থ অর্জন করা।[] চারটি পুরুষার্থের নাম হল:

  • ধর্ম: "(ধর্মীয় ও সামাজিক) নীতিবোধ, আধ্যাত্মিক ও আনুষ্ঠানিক কর্তব্যকর্ম।
  • অর্থ: "(জাগতিক ও অর্থনৈতিক) প্রগতি।"
  • কাম: "(পার্থিব) সুখ।"
  • মোক্ষ: "(আধ্যাত্মিক) মুক্তি।"

ধর্মশাস্ত্র এবং রামায়ণমহাভারত মহাকাব্যে প্রথম যথাযথ চতুর্বিধ পুরুষার্থ অর্জনের জন্য যথাযথভাবে জীবনযাপনের উপদেশ দেওয়া হয়।[] প্রাচীন ধর্মগ্রন্থে বলা হয়েছে ধর্ম, অর্থ ও কাম মানুষের সহজে অর্জনযোগ্য তিনটি পুরুষার্থ; এগুলি ত্রিবর্গ নামে পরিচিত। এর থেকে মনে হয়, মোক্ষ অর্জন জীবনের শেষভাগের জন্য নির্দিষ্ট ছিল।[] অন্যমতে, ত্রিবর্গ জীবনের গার্হস্থ্য আশ্রমের লক্ষ্য, এবং মোক্ষ সারাজীবনের লক্ষ্য। সাধারণত সন্ন্যাস আশ্রমে গিয়ে গৃহস্থ মোক্ষ অর্জনে প্রয়াসী হতেন। আর একটি মতে, ত্রিবর্গ সামাজিক লক্ষ্য, কিন্তু মোক্ষ ব্যক্তিগত লক্ষ্য।[] ত্রিবর্গ ধারণার সঙ্গে মোক্ষ অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত হয়ে পড়ে। তারপরই এই সমগ্র ধারণাটি চতুর্বর্গ নামে পরিচিত হয়।

বাৎস্যায়নের কামসূত্র, কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র, বিভিন্ন ধর্মশাস্ত্র পুরুষার্থগুলিকে নানাভাবে ব্যাখ্যা করেছে। মনুস্মৃতি ধর্মকে ব্যাখ্যা করেছে "ধর্মীয়, সামাজিক ও ব্যক্তিগত নীতিবোধ হিসাবে। প্রধান প্রধান সূত্রগুলি এবং ছয়টি প্রধান দর্শনে মোক্ষকে "পরম-পুরুষার্থ" বা শ্রেষ্ঠ পুরুষার্থ বলে বর্ণনা করেছে।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. For kāma, artha, and dharma as "brahmanic householder values", see Flood (1996:17). Cf. also Apte (1965:626); Hopkins (1971:78)
  2. Hiltebeitel (2002:17).
  3. For example, see Olivelle (1993:217). For a detailed discussion, cf. Prasad (2008).
  4. Prasad (2008:360-362).
  5. Hiltebeitel (:17).